আসামে এনআরসি তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই সারা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছে। এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ১৯ লক্ষ মানুষ। আগামী ১৪ ই সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হবে পূর্ণাঙ্গ তালিকা। ভুলে ভরা নাগরিকপঞ্জি নিয়ে বিরোধীদের পাশাপাশি সুর চড়িয়েছে দেশ ও আসামে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি। এই পরিস্থিতিতেই সামনে এল এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ।
চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা প্রকাশের পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদেশি নোটিস দিতে শুরু করেছে আসামের বিজেপি সরকার। আর নোটিশ পাচ্ছেন এনআরসি তালিকায় নাম থাকা মানুষরাই। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে ত্রিপুরা কাগজের একটি প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘চূড়ান্ত এনআরসি তালিকা প্রকাশের পর বাড়ি বাড়ি বিদেশি নোটিশ পাঠানো শুরু করেছে সোনওয়াল সরকার। আশ্চর্যের বিষয় হল, যাদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, তাদেরকে নয়। বরং যাদের নাম এনআরসিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে বেছে বেছে বিদেশি নোটিশ ধরানো শুরু হয়েছে। ১৪ ই সেপ্টেম্বর পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের আগে, কাছাড় জেলার কাটিগড়া রাজস্ব চক্রের অধীন ৫ টি গ্রামের ৭৮ জনকে একদিনে বিদেশি নোটিস ধরায় সীমান্ত পুলিশ’। ওই প্রতিবেদনেই উঠে এসেছে এমন নোটিশ পাওয়া মানুষদের কথা।
ডেইলি দেশের কথা’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখানে বিজেপির সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে চলেছে ২০১৭ সালে গুয়াহাটি হাইকোর্টের একটি রায়। যে রায়ে বলা হয়েছিল, কেউ যদি আদালত বা ট্রাইবুনালে বিদেশি ঘোষিত হন, তাহলে তাঁর সন্তান এবং ভাই-বোনকেও বিদেশি হিসেবেই অভিহিত করা হবে। এখন যাঁরা এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন, তাঁদের ট্রাইবুনালে আপিল করে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ট্রাইবুনালের বিচারে যদি তিনি বিদেশি হিসেবে নথিভুক্ত হয়ে যান, তাহলে তাঁর পরিবার ও নিকটাত্মীয়দের নাম এনআরসি তালিকায় থাকলেও, তাঁরা সবাই অবৈধ বিদেশি হয়ে যাবেন। সবারই নাম বাদ যাবে এনআরসি থেকে। ফলে যাঁদের পরিবারের একজনের নাম এনআরসিতে নেই, তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে গোটা পরিবারকেই অবৈধ বিদেশি হয়ে পড়তে হবে কিনা তা নিয়ে এখন প্রবল উৎকণ্ঠার প্রহর গুণছে অসম। তার সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে এনআরসিতে নাম থাকা ব্যক্তিদেরও স্রেফ সন্দেহের বশে নোটিশ পাঠানোর ঘটনাক্রম। এই জোড়া প্রক্রিয়ায় এনআরসি ছুটের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।