টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারত এখন পয়েন্ট টেবিলে এক নম্বরে আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়াইট ওয়াশ করে ফুরফুরে মেজাজে টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু এতকিছুর পরেও ভারতের ওপেনিং জুটির ব্যর্থতা নিয়ে ভাবাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দুই টেস্টে ওপেনিং জুটি হিসেবে লোকেশ রাহুল ও মায়াঙ্ক আগরওয়াল বেছে নিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। কিন্তু বড় পার্টনারশিপ তাঁরা গড়ে তুলতে পারেননি। ব্যর্থ লোকেশ রাহুলের পরিবর্তে এবার টেস্টেও ওপেনারের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে রোহিত শর্মাকে। দাবিটা গত কয়েকদিন ধরেই জানিয়ে আসছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি, ভিভিএস লক্ষ্মণ, গৌতম গম্ভীরের মতো প্রাক্তনীরা। এই দাবিই হয়ত মান্যতা পেতে চলেছে এবার। টেস্ট টিমে একজোড়া নতুন ওপেনার পেতে চলেছে। নতুন নাম শুভমন গিল।
আজ জাতীয় নির্বাচকমণ্ডলী দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট দল বাছতে বসছে। সেখানে ওপেনার রোহিত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে এবং যা ইঙ্গিত, টেস্ট ক্রিকেটে তাঁকে মিডল-অর্ডার থেকে শুরুতে তুলে আনাটা শুধুই সময়ের ব্যাপার। বিশাখাপত্তনমে প্রথম টেস্টেই হয়তো মায়াঙ্ক আগরওয়ালের সঙ্গে ওপেন করতে দেখা যাবে রোহিতকে। তার জন্য প্রস্তুতি ম্যাচে বোর্ড প্রেসিডেন্টস একাদশের হয়ে তাঁকে খেলিয়ে তৈরি হওয়ার সুযোগ দেওয়ার কথাও তুলছেন কেউ কেউ।
দ্বিতীয় জন শুভমন গিল। ভারতীয় ওপেনারদের সাম্প্রতিক ব্যর্থতা তাঁকেও প্রবল ভাবে আলোচনায় এনে দিতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজে দু’টি টেস্টে কে এল রাহুল তো ব্যর্থ হয়েইছেন, আহামরি কিছু করতে পারেননি মায়াঙ্কও। এখনই তাঁকে সরানোর কথা ভাবা না হলেও বিকল্প তৃতীয় ওপেনার হাতে রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
তিরুঅনন্তপুরমে ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে চার দিনের বেসরকারি টেস্টে মঙ্গলবারই ১৫৩ বলে ৯০ রান করেছেন শুভমন। উপস্থিত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের প্রভাবিত করার মতো তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে, এই ইনিংস তিনি খেলেছেন ওপেনার হিসেবে। দল নির্বাচনী বৈঠকের ঠিক আগে খেলা এই সুন্দর ইনিংস শুভমনের দাবি আরও জোরালো করে তুলেছে।
শুভমন ভারতীয় ক্রিকেটে এই মুহূর্তে অন্যতম সেরা প্রতিভা অবশ্যই। রাহুল দ্রাবিড়ের কোচিংয়ে বেড়ে উঠেছেন। অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপ জয়ী দলের অন্যতম স্থপতি ছিলেন। পঞ্জাবের কৃষিবিদের ছেলে আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়েও নজর কেড়েছেন। সেখানে আবার নীচের দিকে ব্যাটিং করেছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজে ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে প্রচুর রান করে এসেছেন। তার মধ্যে তারুবায় তৃতীয় বেসরকারি টেস্টে ২০৪ নট আউটও ছিল। যদিও সেই রানও তিনি করেছিলেন মিডল-অর্ডারে খেলে।
জাতীয় দলের হেড কোচের মন্ত্র এখন, যত পারো তরুণ রক্ত আনো। নতুন মুখের তালিকায় ঋষভ পন্থ, শ্রেয়স আইয়ারদের সঙ্গে শুভমনও খুব উল্লেখোগ্য নাম। টেস্টের দরজা দিয়ে ঢুকে এর পর সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও তাঁর নাম গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হবে, সন্দেহ নেই। বরং ঋষভ পন্থ আসন্ন টেস্ট সিরিজে কিছুটা পিছিয়ে থেকে শুরু করছেন। দেশের মাঠে স্পিন-বন্ধু এবং অসমান বাউন্সের পিচের কথা মাথায় রেখে উইকেটকিপার হিসেবে প্রথম পছন্দ হতে যাচ্ছেন ঋদ্ধিমান সাহা। এ ব্যাপারে অধিনায়ক কোহালির কিপিংয়ের উপরে বেশি নজর এবং ঋদ্ধির কিপিং উৎকর্ষের প্রতি আস্থা তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তবে ঋদ্ধি এবং ঋষভ দু’জনকেই রেখে পনেরো জনের দল ঘোষণা করা হতে পারে। শোনা যাচ্ছে, দল পরিচালন সমিতির ভোট থাকছে বাংলার উইকেটকিপারের দিকেই।