অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে। আজই সেই মহাক্ষণ। ভারতের ‘চাঁদ জয়ের’ পালা। প্রযুক্তিগত দিক থেকে যাকে ঐতিহাসিক বলছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। কিন্তু কাজটা যে মোটেই সহজ নয়, তা বলাই বাহুল্য। কারণ গত এপ্রিলের সেই দুর্ঘটনা এখনও স্মৃতিতে স্পষ্ট। ইজরায়েলের পাঠানো মহাকাশযানটি যখন চাঁদের পিঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, ঠিক তখনই তার ইঞ্জিন বিগড়ে যায়। ফলে, সেটি মুখ থুবড়ে পড়ে চাঁদের বুকে। তীরে পৌঁছে তরী ডোবে ইজরায়েলি মহাকাশযানের। শেষ মুহূর্তে ভেঙে যায় সব স্বপ্ন।
তাই চন্দ্রযান-২ নিয়ে শেষবেলার টেনশন কম নয়। সময়ের হিসেবে শনিবার হলেও আজ রাতেই সেই পরম ক্ষণ। ভারতীয় সময় একটা বেজে পঞ্চান্ন মিনিট। কিন্তু তার আগে কী হবে তা নিয়ে উত্তেজনা কম নয়। আর ইসরোর বিজ্ঞানীদের দাবি মতো, শেষ ১৫ মিনিটই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এতদিনের এত পরিশ্রমের আসল ফল জানা যাবে ওই ১৫ মিনিটেই। তাই ওই সময়টাকে ‘ফিফটিন মিনিট অফ টেরর’ (আতঙ্কের ১৫ মিনিট) বলে অভিহিত করেছেন ইসরোর চেয়ার পারসন কে শিবান।
তিনি বলেছেন, ‘একটা রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা চলছে সবার মধ্যে। সকলে কনসোলের দিকে তাকিয়ে। সবার চোখ প্রতিটি ওঠাপড়ার দিকে। কারণ, ওখান থেকেই জানা যাবে আমরা ঠিক পথে এগোচ্ছি কিনা। সব সময়েই থাকছে উত্তেজনা কারণ, এর পরে কী হবে সেটা অজানা।’ শুধু শিবানই নন। এ হেন টানটান উত্তেজনার পরিস্থিতিতে উদ্বেগের শেষ নেই ইসরোর প্রযুক্তিবিদদেরও। তবে উত্তেজনা যে শুধু আজ তাই নয়। সেই ২২ জুলাই যখন চন্দ্রযান ২-এর উৎক্ষেপণ হয়, সেদিন থেকেই বিজ্ঞানীরা দিনে ১৬ ঘণ্টা করে কাজ করছেন সকলে।
ইসরোর চেয়ার পারসন জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত সব কিছুই পরিকল্পনা মতো হয়েছে। রাত ১টা ৫৫ মিনিটের দিকে এখন আটকে চোখ। আর তার আগের ১৫ মিনিট। টানটান উত্তেজনার মধ্যেই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছে যাবে ভারত। নতুন গর্বের অধিকারী হব আমরা। উল্লেখ্য, ইসরো সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে ‘ল্যান্ডার’ বিক্রমের অবতরণের জন্য দু’টি জায়গা বেছে রাখা হয়েছে। তবে কোথায় সে অবতরণ করবে তা ঠিক করবে বিক্রম নিজেই। শরীরে বসানো ক্যামেরা দিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠের ছবি তুলতে তুলতে সে আদর্শ স্থান বেছে নেবে। বিক্রমের অবতরণ বিভিন্ন চ্যানেল এবং নেট মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারও হবে।