অধিবেশন ঘিরে ধুন্ধুমার বিধানসভায়। নজিরবিহীনভাবে পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দিকে তেড়ে গেলেন কংগ্রেস বিধায়করা। শেষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ সামলান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঘটনার সূত্রপাত, কংগ্রেস বিধায়ক প্রতিমা রজকের একটি প্রশ্ন ঘিরে। বড়ঞার বিধায়ক পরিবহণ মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, “সরকারি বাসগুলিতে এখন যে লোক নেওয়া হচ্ছে, সেগুলি কি সরকারি নিয়ম মেনে হচ্ছে? আমার কাছে খবর আছে, মোটা টাকার বিনিময়ে বাসে কর্মী নিয়োগ হচ্ছে। একেক জনকে নিয়োগ করার জন্য ৩-৪ লক্ষ টাকা নেওয়া হচ্ছে।” কংগ্রেস বিধায়কের এই প্রশ্নে রেগে অগ্নিশর্মা হয়ে যান পরিবহণ মন্ত্রী। তাঁর দাবি, কংগ্রেস বিধায়ক মিথ্যা অভিযোগ করছেন। শুভেন্দু বলেন,”উনি যে অভিযোগ করছেন, তা হয় প্রমাণ করতে হবে। নাহয় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইতে হবে।” সঙ্গে সঙ্গে শুভেন্দুকে পালটা দেন কংগ্রেস বিধায়কও। তিনি বলেন, “বিধানসভায় ক্ষমা চাইতে হবে কিনা, তা ঠিক করার এক্তিয়ার মন্ত্রীর নেই। সেটা ঠিক করবেন স্পিকার।” প্রতিমার এই মন্তব্য তেলেবেগুনে রেগে ওঠেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি একপ্রকার বিদ্রুপের সুরেই বলেন,”মুর্শিদাবাদ থেকে কংগ্রেসের আর কেউ জিততে পারবে না। এরপর মুর্শিদাবাদ ফাঁকা হয়ে যাবে’।
এই মন্তব্যে মুর্শিদাবাদেরই ভরতপুরের কংগ্রেস বিধায়ক কমলেশ চট্টোপাধ্যায় চিৎকার করতে করতে শুভেন্দু অধিকারীর দিকে তেড়ে যান। পাল্টা তৃণমূল বিধায়করাও ওয়েলে নেমে আসেন। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে নিজের আসন ছেড়ে উঠে আসতে হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দলীয় বিধায়কদের ধমক দিয়ে নিজের আসনে ফেরত যেতে বলেন মমতা। সেই সঙ্গে বিরোধী বিধায়কদের অনুরোধ করেন নিজের আসনে ফিরে যেতে। মমতার হস্তক্ষেপে নিয়ন্ত্রণে আসে পরিস্থিতি। এরপর বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় রুলিং দেন, বিধায়ক ও মন্ত্রী উভয়কেই প্রশ্নোত্তর পর্বে সংযত এবং সতর্ক থাকতে হবে। মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য বিধানসভার কার্য বিবরণী থেকে বাদ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, শুভেন্দু অধিকারীর দাপটে মুর্শিদাবাদ কংগ্রেস প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে। প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও কংগ্রেস কর্মী তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন। গড় ভাঙছে বিজেপিরও। এই হতাশা থেকেই কংগ্রেস বিধায়করা পরিবহনমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দিকে তেড়ে যান বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।