২ দিন আগেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সংবাদমাধ্যমের সামনেই ঘোষণা করেছেন গোটা দেশের ১০ টি ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরন হবে। সেই নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছিল। আর এবার বাংলায় এই ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরন নিয়ে নতুন করে টানাপোড়েন শুরু হলো।
গত ৪২ বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গে স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটির (এসএলবিসি) আহ্বায়কের দায়িত্ব সামলাচ্ছে ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (ইউবিআই)। শুক্রবার যাদের পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) সঙ্গে মেশানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আর এর ফলেই তৈরি হয়েছে ধন্দ। এমনিতে নিয়ম অনুসারে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার পরে ইউবিআইয়ের আলাদা অস্তিত্ব না-থাকারই কথা। ফলে প্রশ্ন উঠছে, এ বার আহ্বায়কের দায়িত্ব সামলাবে কোন ব্যাঙ্ক?
সংশ্লিষ্ট মহলের খবর, পশ্চিমবঙ্গে কমিটির আহ্বায়কের জায়গা নেওয়ার সম্ভাবনা যাদের রয়েছে, তাদের অন্যতম ইউবিআইকে মেশানোর পরে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক এবং ইউকো ব্যাঙ্কের ওপর থাকার কথা। তবে শেষ পর্যন্ত কে সেই দায়িত্ব পাবে, তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম, ত্রিপুরা, মণিপুর এবং মিজোরামের এসএলবিসির লিড ব্যাঙ্কও ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া।
একই সঙ্গে এসএলবিসির দায়িত্ব থেকে ইউবিআইয়ের সরে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে রাজ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি নিয়েও তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। ১৯৭৭ সালে এসএলবিসির তৈরির সময় থেকেই রাজ্যে আহ্বায়কের ভার সামলাচ্ছে ইউবিআই। রাজ্য সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্কও ভাল। একাংশের আশঙ্কা, এই পদে তারা না-থাকলে ব্যাহত হতে পারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া।
অর্থ দফতর সূত্রের দাবি, রাজ্যে ব্যাঙ্কগুলিতে মোট যত আমানত জমা পড়ে, বিশেষত অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে তার তুলনায় ঋণ দেওয়ার হার দ্রুত বেড়েছে। অর্থ দফতরের এক কর্তা জানান, শুধু ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে ঋণ দু’বছরে ১৮,০০০ কোটি টাকা বেড়েছে। চলতি অর্থবর্ষে তার লক্ষ্যমাত্রা ১২,০০০ কোটি বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭০,০০০ কোটি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও ঋণ অনেকটা বেড়েছে। অর্থ দফতরের প্রশ্ন, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক সরলে ঋণ বৃদ্ধির এই গতি শ্লথ হয়ে যাবে না তো?