বহুদিন যাবৎ উৎকণ্ঠা দানা বাঁধছিল আসাম জুড়ে। অবশেষে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শনিবার সকাল দশটায় প্রকাশিত হয়েছে আসামের জাতীয় নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা। যা থেকে বাদ গিয়েছে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার ৬৫৭ জনের নাম। আপাতত এঁদের প্রত্যেকেরই ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে। প্রত্যেকেই এই মুহূর্তে দেশহীন। অনেকই রয়েছেন, যাঁরা হয়তো ছোটবেলা থেকেই ভারতকে নিজের জন্মভূমি বা দেশ হিসেবে জেনেছেন। তাঁরা এখন নিজভূমে পরবাসী। যে কোনও মুহূর্তে ভিটেমাটি ছাড়তে হতে পারে তাঁদের। এই ১৯ লক্ষের তালিকায় অধিকাংশই যে বাঙালি, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যা নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য।
তাঁর ধারণা, তালিকায় যে ১৯ লক্ষ নাম রয়েছে, তার অধিকাংশই বাংলা ভাষাভাষী মানুষ। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বাঙালিদেরই টার্গেট করা হচ্ছে বলেই মনে করছেন আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য। তাঁর কথায়, ‘একটা বিশেষ ভাষাগোষ্ঠীর ১৯ লক্ষ মানুষই যদি বাদ পড়ে যায়, তাহলে রইল কী? যে জাতিবিদ্বেষ এবং জাতিঘৃণা সংবিধানিক রীতির ওপরে চলে যায়, গণতান্ত্রিক রীতির উপরে চলে যায়, এটা তো তারই জয় হল। এটা তো অন্ধকারের জয়। আমরা লড়াই করে যাচ্ছি। লড়াইটা কয়েক দশক ধরেই চলবে।’ তপোধীরবাবু আরও বলেন, ‘এটা জাতিবিদ্বেষের জয়। এই লড়াই বাঙালির একার নয়। এটা সবার লড়াই। আজ যেটা বাঙালির বিরুদ্ধে হচ্ছে, আগামী দিনে সমগ্র জাতির বিরুদ্ধে হবে। এই বোধটা যদি না থাকে তাহলে দেশে ভয়ানক বড় দুর্দিন আসতে চলেছে।’