আদালত খুব ভালো করে জানে, তার কর্তব্য। ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের বিরোধিতায় দায়ের হওয়া একগুচ্ছ মামলা আজ পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠিয়ে কেন্দ্রকে এই কথাই বলল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ থেকে সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি শুরু হবে মামলাগুলির।
জম্মু–কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ এবং রাজ্য ভেঙে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার বৈধতা খতিয়ে দেখবে শীর্ষ আদালত। সরকারকে নোটিসও পাঠানো হয়েছে। তবে ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ বিষয়টি পর্যালোচনা করবে অক্টোবরে। আরও এক মাস সময় পাচ্ছে কেন্দ্র। ৩১ অক্টোবর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপ ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। সরকার আদালতে বলেছে, এভাবে সরকারকে নোটিস পাঠালে সীমান্তপারে তার প্রভাব পড়বে। কিন্তু বিচারপতিরা জানিয়ে দেন, তাঁরা জানেন তাঁরা কী করছেন, এবং একবার আদেশ দেওয়ার পর তাঁরা আর তা বদলাবেন না।
সংসদে পাশ হওয়া ‘জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন আইন, ২০১৯’ এবং এই সংক্রান্ত রাষ্ট্রপতির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে শীর্ষ আদালতে। আজ সেই মামলাগুলিই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস এ বোবদে এবং বিচারপতি এস এ নাজিরের বেঞ্চে উঠেছিল। কেন্দ্র ও জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসনকে নোটিস পাঠিয়ে সাত দিনের মধ্যে জবাব চেয়েছে আদালত।
৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের জেরে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপের বিরোধিতায় প্রথম মামলা করেছিলেন আইনজীবী এম এল শর্মা। পরে মামলা করেন কাশ্মীরি আইনজীবী শাকির সাবির। উপত্যকাবাসীর অধিকার হরণের অভিযোগ তুলে ন্যাশনাল কনফারেন্সও মামলা করে। আদালতে যান প্রাক্তন আমলা শাহ ফয়সল, ছাত্র নেত্রী শেহলা রশিদ, বেশ কয়েক জন প্রাক্তন প্রশাসনিক ও সামরিক কর্তা, প্রাক্তন প্রতিরক্ষা কর্তা-সহ অনেকে। আজ সরকারের যুক্তি ছিল অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সলিসিটর জেনারেল দু’জনেই যখন আদালতে উপস্থিত রয়েছেন, তখন আর নোটিস পাঠানোর দরকার নেই। কিন্তু এই যুক্তি মানেননি বিচারপতিরা। ১৭ নভেম্বর অবসর নেবেন প্রধান বিচারপতি গগৈ। মাঝখানে রয়েছে পুজো ও দীপাবলির ছুটি। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে অযোধ্যা মামলার মতো গুরুত্বপূর্ণ শুনানি চলছে। ফলে এই সীমিত সময়ের মধ্যে ৩৭০ মামলার সাংবিধানিক বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি নিজেকে রাখবেন কি না, জল্পনা শুরু হয়েছে তা নিয়ে।