কল্পা যদি একটা ক্যানভাস হয়, প্রকৃতি তবে মন খুলে তাতে রঙ ভরেছে। নিখুঁতভাবে একটু একটু করে এঁকেছে কল্পাকে। পবিত্র কিন্নর-কৈলাস পর্বতমালার ঘেরাটোপে কল্পা অবস্থিত। সকালে উপত্যকায় রোদের আঁকিবুকি। সূর্য পাহাড়ের গায়ে ঢলে পড়লেই ঝুপ করে অন্ধকার নামে এখানে। আর চারিদিক থেকে চুঁইয়ে পড়ে নিঃশব্দ শান্তি।
হিমাচল প্রদেশের এক কল্পলোক এর নাম কল্পা। কল্পাকেই বলা হয় কিন্নরিদের দেশ। কিন্নর ভারত সীমান্তের শেষ ভূখণ্ড। কল্পার গোল্ডেন আপেলের খ্যাতি জগতব্যাপী। তবে অনুমতি ছাড়া আপেল গাছে হাত দিলে জরিমানা করা হয়। এই নিয়ম শুধু কল্পায় নয়, পুরো হিমাচলে এই নিয়ম বিরাজমান।
শীতে প্রচন্ড তুষারপাতে ঢেকে যায় কল্পা। সাংলা থেকে করছাম হয়ে কল্পা যেতে হয়। কল্পা ঢোকার আগেই দেখা মিলবে কিন্নর জেলার সদর শহর রেকংপিও এর। জমজমাট আর ভিড়ে ঠাসা। সদর শহর যেমন হয় আরকি! ছোট্ট শহরের মাথার উপর বরফমোড়া পাহাড়ের চূড়ার ক্যানভাস। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথের দু’পাশে পাইনের গভীর বন। তারই ফাঁকে পবিত্র কৈলাশ শৃঙ্গের হাসিমাখা মুখ।
কল্পা থেকে ৭ কিমি দূরে ইকো পয়েন্ট আর সুইসাইড পয়েন্ট দেখে চলে যেতে পারেন অল্পচেনা রোখি গ্রামে। চারদিকের তুষারধবল শৃঙ্গঘেরা রোখির রূপ অসাধারণ। কল্পাকে দেখতে হলে আপনাকে অন্তত দু’দিন সময় ব্যয় করতে হবে। কাল্পা থেকে ১০ কিমি দূরে পাঙ্গি ঘুরে আসতে পারেন যা আপেল বাগিচার জন্য খুব নামকরা। অপরূপ শোভায় ভরা পাঙ্গির প্রাকৃতিক দৃশ্য অনেকদিন আপনার মনে দাগ কেটে থাকবে।
বাঙালি মানেই ভ্রমণ পিপাসু। আর এবারের পুজোর ছুটিতে ঘুরে আসতেই পারেন কিন্নরিদের দেশে। কয়েকটা দিন রোজকার জীবন ছেড়ে প্রকৃতির কাছে এসে বসে থাকতেই পারেন।
কিভাবে যাবেন..
সাংলা থেকে কল্পার দূরত্ব ৫২ কিমি। করছাম হয়ে আসতে হয়। রেকংপিও থেকে মাত্র ১১ কিমি। শিমলা থেকে দূরত্ব ২৫২ কিমি। সরাসরি বাসেও যাওয়া যায়। সিমলা থেকে বাস ধরে কল্পায় যেতে সময় লাগে ৯ ঘণ্টা। তবে গাড়ি করে যাওয়াটা সবচেয়ে ভালো। কল্পাতে থাকবার জন্যে সবথেকে আদর্শ জায়গায় অবস্থিত হিমাচল প্রদেশ সরকারের হোটেল কিন্নর কৈলাস।