‘কিচ্ছু চাইনি আমি আজীবন ভালোবাসা ছাড়া…’ গানের কলিতে যতই ভালোবাসার কথা বলা হোক, তবে বাস্তবে এই ভালোবাসাই কাল হয়ে গেল। এক উলাট-পুরানের গল্প। এতদিন ঝগড়ার কারণেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ডিভোর্স হত। কিন্তু ডিভোর্সের এক অদ্ভুত কারণে স্তম্ভিত বিচারক। ঝগড়া না করে ভালোবাসাই ডিভোর্সের কারণ। এমনই এক ঘটনা আরব আমিরশাহিতে।
স্বামীর থেকে বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন এক মহিলা। কারণ হিসেবে তাঁর অভিযোগ, ‘বড্ড বেশিই ভালোবাসে।’ ফুজাইরার আদালতে দায়ের করা মহিলার এই অভিযোগে হইচই সে দেশের সংবাদমাধ্যমে।
আদালতে দাখিল করা আবেদনে ওই মহিলা জানিয়েছেন, একবছর আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। বিয়ের পর থেকে তাঁর প্রতি স্বামীর ভালবাসা দেখে আপ্লুত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। রান্না করা থেকে ঘর পরিষ্কার, বাজার করা থেকে সংসারের যাবতীয় কাজ কোনও কিছুই স্ত্রীকে করতে দিতেন না ওই ব্যক্তি। প্রথম বিষয়টি ভাল লাগলেও আস্তে আস্তে বিষয়টি বিরক্তিকর হয় ওঠে ওই মহিলার কাছে। কেমন যেন দমবন্ধ পরিবেশ তৈরি হয়ে গিয়েছিল চারপাশে। পরিস্থিতি এমন জায়গা গিয়েছিল যে ঝগড়া করার জন্য স্বামীকে রাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেও কোনও লাভ হয়নি। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেও কোনও লাভ হয়নি। বরং স্ত্রীর প্রতি আরও ভালবাসা বেড়েছে স্বামীর। এই আচরণে বিরক্ত হয়েই শেষপর্যন্ত বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
এপ্রসঙ্গে ওই মহিলা বলেন, ‘বিয়ের পর থেকে একটা দিনও আমাদের ঝগড়া হয়নি। তাই আমি সবসময় প্রার্থনা করতাম যেন একদিনের জন্য হলেও অশান্তি হয়। ও আমাকে বকাবকি করে। কিন্তু, কোনওদিনই সেই স্বপ্ন সফল হয়নি। ফলে নিরুত্তাপ অবস্থাতেই কেটে যাচ্ছিল আমার জীবন। কেমন যেন দমবন্ধ করা পরিবেশের মধ্যে কাটছিল দিনগুলো। বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হই। বিচ্ছেদের আবেদন জমা দিই।’
ভালবেসেও স্ত্রীর এই আচরণে অবাক হয়েছেন স্বামী। তাঁর কথায়, ‘আমি তো কিছু খারাপ করিনি। একজন আদর্শ ও ভদ্র স্বামী হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। একবার আমার স্ত্রী শরীরের ওজন নিয়ে আপত্তি তুলেছিল। তাই ডায়েট চার্ট মেনে খাবার খেয়ে ও ব্যায়াম করে শরীরের মেদ ঝড়িয়ে ছিলাম। তাছাড়া আমার মনে হয় বিয়ের প্রথম বছরেই সম্পর্ক গভীরতা ঠিক বোঝা যায় না। আরও কিছুটা সময় দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, প্রতিটি মানুষই তাঁদের ভুল থেকে শেখে।’ যা বিস্মিত করেছে বিচারকে। উপযুক্ত কারণের অভাবে এই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি।