বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে মোদী সরকারের বাজেটে যেমন তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ঠিক তেমনই চাহিদার মানোন্নয়নেও কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে পারেনি কেন্দ্র। আর এই দুই কারণেই একদিকে যেমন কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে ভারতের শিল্প সংস্থাগুলোকে, তেমনি এই অবস্থায় কার্যত তলানিতে পৌঁছেছে পরিকাঠামো বৃদ্ধিও।
এবার দেশের এ হেন অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। তাঁর কথায়, সরকার খুব দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি একেবারে ধসে যাবে বলে অনুমান করেন তিনি।
একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রঘুরাম রাজন বলেন, ‘ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার ২০১৮-১৯ সালে ৬.৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ২০১৪-১৫ সালের পর যা সবচেয়ে ধীর গতির। বিভিন্ন বেসরকারি বিশেষজ্ঞ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের অনুমান যে চলতি বছরের জিডিপি সরকারের অনুমানের (৭ শতাংশ) থেকে কম হবে। বিভিন্ন বেসরকারি বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন খাতে যা অনুমান করেছেন, তার অনেকগুলোই সরকারের অনুমানের থেকে নীচে এবং আমি মনে করি অর্থনীতিতে এমন মন্দা খুবই উদ্বেগজনক।’
প্রসঙ্গত, গাড়ি এবং আনুষঙ্গিক শিল্পে গত কয়েক বছরে হাজার-হাজার মানুষ কাজ হারিয়েছে। দেশের আবাসন শিল্পও ধ্বংসের মুখে। এই পরিস্থিতি দেখে ২০০৮ সালের মেল্টডাউনের পুনরাবৃত্তি করে রাজন বলেন, ‘আমি কি কোনো বড় আশঙ্কার পূর্বাভাস দিচ্ছি? আমি জানি না তবে আমার মনে হয় বিভিন্ন দিক থেকে এই আশঙ্কা সত্যি হবে। কেবল পুরোনো সমস্যাগুলোর সমাধান করে নতুন সমস্যাগুলো রোধ করা যাবে না। অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধির হার বাড়ানোর জন্য এখনই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’
উল্লেখ্য, জুন ২০১৯-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে শিল্প উৎপাদনের হার কমে দাঁড়িয়েছে ২ শতাংশে। গত বছর জুন মাসে যা ছিল ৭ শতাংশ। ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পে গত বছরে ৬.৯ শতাংশ থেকে নেমে এবছর হয়েছে ১.২ শতাংশ। খনি শিল্পে বৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশ থেকে এ বছর হয়েছে ১.৬ শতাংশ।