সেই নোটবন্দীর সময় থেকেই মোদী সরকারের নানা পদক্ষেপ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বারবারই মুখ খুলেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় যখন ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান হয়ে উঠেছিল প্রহারের মন্ত্র, তখনও মুখ খুলে তিনি বলেছিলেন, ‘জয় শ্রীরাম স্লোগান বাংলার সংস্কৃতি নয়। এসব ইদানীংকালের আমদানি। লোককে প্রহার করতে হলে এখন এ সব বলা হচ্ছে।’ এবার জম্মু-কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেও তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, গণতন্ত্র না ফেরালে কাশ্মীর নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব নয়।
যেভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসন আরোপ করা হল কাশ্মীরে, যেভাবে সব মানুষের অধিকারকে অগ্রাহ্য করা হল, তাতে সায় জানাতে পারছেন না এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, বহু চেষ্টার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি কায়েম করা সম্ভব ছিল এদেশে। পশ্চিমী দুনিয়ার বাইরে ভারতই প্রথম দেশ, যেখানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। সেই নিয়ে ভারতবাসী হিসেবে গর্ব ছিল তাঁর। কিন্তু আফশোস, আজ এমন সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে যে ভারতের সেই প্রতিষ্ঠা নষ্ট হচ্ছে।
৩৭০ ধারার অবলুপ্তির পর দেশে অনেকে খুব উল্লসিত কাশ্মীরে জমি কেনা যাবে বলে। এ প্রসঙ্গে অমর্ত্যর সাফ কথা, কে জমি কিনতে পারবে, কে পারবে না, সেটা সেখানকার মানুষই ঠিক করবেন। কারণ ওটা তাঁদের নিজেদের জায়গা। আইনত, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকারী তাঁরাই। তাছাড়া কাশ্মীরের মানুষ এবং তাঁদের নেতারা কী বলছেন, সেটা যদি না শোনা হয়, তা হলে ন্যায়বিচার হতে পারে না। যাঁরা অতীতে গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, রাজ্যে সরকার গড়েছেন, তাঁদেরও যদি জেলবন্দী করা হয়, আটকে রাখা হয়, তাহলে তা গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করারই সামিল।