এর আগে একের পর এক সরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে উত্তাল হয়েছিল দেশ। আর এবার প্রতিরক্ষা শিল্পে বেসরকারিকরণের প্রতিবাদ ঘিরে সাত সকালেই ধুন্ধুমার বাধল উত্তর ইছাপুর রাইফেল ও মেটাল ফ্যাক্টরির গেট চত্বরে। বেসরকারিকরণ ও কর্মী ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিরক্ষা শিল্পে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সমস্ত শ্রমিক সংগঠনগুলি। সেই কর্মসূচি পালন করতেই মঙ্গলবার সকাল সকাল ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরির সামনে আন্দোলন বিক্ষোভে সামিল হন কয়েকশো কর্মী।
বিক্ষোভরত শ্রমিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা কাজে যোগ দিতে আসা অন্য কর্মীদের ফ্যাক্টরির ভেতরে ঢুকতে বাধা দিতে গেলে তাঁদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় ভারতীয় মজদুর সংঘের কর্মী সমর্থকদের। এ দিন সকাল থেকেই রাইফেল ও মেটাল ফ্যাক্টরির গেট চত্বরে মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী। দু’পক্ষের কর্মী সমর্থকদের সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে তাঁরা।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, দুএকটি বহুজাতিক সংস্থার স্বার্থরক্ষা করতেই কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিরক্ষাশিল্পে বেসরকারিকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এর ফলে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। কারণ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গোপনীয়তা নষ্ট হবে। বেসরকারিকরণ হলে কর্মী ছাঁটাইয়েরও আশঙ্কা রয়েছে। তাই দেশজুড়ে সমস্ত প্রতিরক্ষা দফতর ও কারখানায় এই অনির্দিষ্ট কালের ধর্মঘট, বিক্ষোভ ও আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছে এআইটিইউসি, আইএনটিইউসি সহ ৫৬ টি শ্রমিক সংগঠন।
দেশের ৪১ টি অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরির ৮৫ হাজার কর্মী ২০ আগস্ট থেকে এক মাস ধরে ধর্মঘট করবেন বলে জানিয়েছেন। আরএসএস প্রভাবিত ভারতীয় প্রতিরক্ষা মজদুর সঙ্ঘও এই ধর্মঘটে যোগ দিয়েছে। অল ইন্ডিয়া ডিফেন্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের নেতা এম কে রবীন্দ্রইন পিল্লাই বলেন, যে কোনও বেসরকারি ম্যানুফ্যাকচারার কেবল লাভের দিকটাই দেখবে। জাতীয় স্বার্থের কথা ভাববে না।
বেসরকারি সংস্থায় উৎপাদিত কোনও পণ্যের গুণমান পরিদর্শন করে তৃতীয় পক্ষ। সংস্থাগুলি নিজেরাই নিজেদের পণ্যকে সার্টিফিকেট দেয়। অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদের গুণমান বিচার করার দায়িত্ব সরকারের হাতেই থাকা উচিত। না হলে জওয়ানদের জীবন বিপন্ন হবে। এখন দেখার কেন্দ্রীয় সরকার দেশের প্রতিরক্ষার দিকে গুরুত্ব বেশি দেবে নাকি দু-একটি বহুজাতিক সংস্থার স্বার্থরক্ষা করতেই বেশি তৎপর থাকবে।