বাজারে বিক্রিবাটা কম। রফতানিও তেমন বাড়ছে না। বেসরকারি লগ্নিতে ভাটার টান। এসবের সঙ্গে যোগ হল, সরকারি খরচে টান।
অর্থ মন্ত্রকের তথ্যই বলছে – চলতি অর্থ বছরের শুরু থেকেই খরচ ছাঁটা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্পে খরচে রাশ টানা হচ্ছে। রাজস্ব আয় থেকে রাজ্যের ভাগেও কম টাকা যাচ্ছে। চতুর্দশ অর্থ কমিশনের নিয়ম মেনে কেন্দ্রের মোট রাজস্ব আয়ের ৪২ শতাংশ রাজ্যগুলির মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার কথা। কিন্তু বাজেট অনুযায়ী, চলতি অর্থ বছরে মাত্র ৩৩ শতাংশ রাজ্যগুলির মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে।
পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিল থেকে জুনে পরিকাঠামো তৈরিতে খরচ বা মূলধনী খাতে ব্যয় গত বছরের এই তিন মাসের তুলনায় ২৭ শতাংশ কমে গিয়েছে। যেখানে বাজেট অনুযায়ী মূলধনী খাতে ব্যয় এ বছর ১১ শতাংশ বাড়ার কথা। রাজস্ব খাতে এই তিন মাসে খরচ বেড়েছে মাত্র ৬ শতাংশ। যেখানে গোটা বছরে রাজস্ব ব্যয় ২২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাওয়ার কথা।
রাজ্যের উন্নয়নের খরচে ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রেও একই ছবি। এক দিকে, কেন্দ্রের আয় থেকে রাজ্যগুলিকে প্রাপ্য অনুযায়ী ৪২ শতাংশ ভাগ দেওয়া হচ্ছে না। এমনিতেই মোদী সরকার সেস-সারচার্জ বসিয়ে আয়ের পথ নিয়েছে। এই খাতে রোজগারের ভাগ রাজ্যগুলিকে দেওয়ার কোনও দায় কেন্দ্রের নেই। ফলে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ কমে যাচ্ছে।
অর্থনীতিবিদদের বক্তব্য, এমনিতেই যখন অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়ছে, তখন সরকারি প্রকল্পেই যদি কম খরচ হয়, তা হলে আর্থিক বৃদ্ধির হার আরও কমে যাবে। রাজ্যগুলি যদি কেন্দ্রের থেকে কম টাকা পায়, তা হলে রাজ্য স্তরেও উন্নয়ন প্রকল্পে খরচ কমবে। এ হল দুষ্টচক্রের ফাঁদ। এক দিকে, আর্থিক বৃদ্ধি কমে যাওয়ায় রাজস্ব আয় কমছে। অন্য দিকে, রাজস্ব আদায় কমছে বলে খরচে রাশ টানা হচ্ছে। তার ফলে আরও বৃদ্ধি কমার আশঙ্কা।