শুরুর দিন থেকেই মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল ‘দিদিকে বলো’। সরাসরি ফোন করে তাঁর কাছে নিজেদের মনের কথা জানানোর জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাতে রাজ্যবাসী আপ্লুত। কারণ অনেকেই বিপদে পড়ে দিদিকে ফোন করে বলছেন তাঁদের সমস্যার কথা। দ্রুতই সেসবের সমাধান করা হচ্ছে। এবার যেমন কল্যাণীর সেন্ট্রাল পার্কের দীর্ঘদিনের পুজো কমিটি ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন করে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের হুমকির অভিযোগ করেছে। বিজেপির নাম না করে কমিটির তরফে বলা হয়েছে, ‘আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না, কী করব? পেশিশক্তি ও অর্থবলের সঙ্গে আমরা কি লড়াই করতে পারব?’
এদিকে ‘দিদিকে বলো’ এই জনসংযোগ কর্মসূচীতে ইতিমধ্যেই ফলোয়ারের সংখ্যা ১৫৪৩৯৭। লাইক করেছেন ১৫২৪৩৩ মানুষ। আবার ‘আমার গর্ব মমতা’ লাইক করেছেন ৯২৮২৫ জন্য এবং ফলোয়ারের সংখ্যা ৯৩৩৯১। আর ৯ আগস্ট পর্যন্ত দিদিকে ফোন করেছেন ৫ লক্ষ মানুষ। অমরকান্তি বসু যেমন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করেছেন, ‘দিদি, পে কমিশন তাড়াতাড়ি কার্যকর করলে ভাল হয়।’ কাটোয়া থেকে ফোন করেছিলেন মন্দিরা চক্রবর্তী। তিনি জানিয়েছিলেন, আমার কোনও রোজগার নেই। না আছে মাটির ওপর থাকা চাল। দিদিকে বলে তিনি পাকা বাড়ি পেয়েছেন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
আবার, উত্তর ২৪ পরগনার প্রশান্ত মাইতি মাটির বাড়িতে থাকতেন। খুব কষ্ট হত। বৃষ্টির সময় বাড়ি থাকতে পারতেন না। কিন্তু এখন সকলের জন্য আবাসনের কর্মসূচীর আওতায় গীতাঞ্জলি প্রকল্পে তিনি পেয়েছেন পাকা বাড়ি। মমতাকে তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাঞ্চন রংরক্ত স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত এলাকার ১০ হাজার মেয়ে। আনন্দধারা প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামবাংলায় বহু মহিলা আজ স্বনির্ভর এবং নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। তাঁরা ‘দিদিকে বলো’–র সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। এভাবে সমস্যার কথা জানালেই হাতেনাতে কাজ হচ্ছে। মুগ্ধ হচ্ছেন রাজ্যবাসী, সবচেয়ে বড় কথা, সরকারি হাসপাতালে হাজারও সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, নানা প্রাপ্তির কাহিনীতে ভরে উঠেছে ‘আমার গর্ব মমতা’ও। ভিডিও ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে অনেকেই তাঁদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তাঁদের গর্ব মমতার প্রতি। এখানে কেউ কেউ লিখেছেন, ‘দিদি মানে মুশকিল আসান, যে কোনও সমস্যার পাশে থাকার আশ্বাস, দিদি মানেই আত্মবিশ্বাস, বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস।’ উল্টোডাঙা থেকে ছাত্রী বর্ষা ঘোষ কন্যাশ্রী সম্পর্কে বলেছেন, ‘বছরে ৭৫০ টাকা পাই। বই-সহ শিক্ষার প্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসপত্র কিনতে পারি। পরিবারেরও সাহায্য হয়েছে।’ বর্ষা মুখ্যমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি।
অশোকনগর থেকে আবার এক ব্যক্তি ভিডিওতে বলেছেন, ‘আপনার সহযোগিতা সবসময় পেয়েছি। ফোন করে খুশি। সাহায্যও পেয়েছি। বাংলা আরও এগিয়ে যাক। আপনি যে সব প্রকল্প নিয়েছেন, তা খুব খুব ভাল।’ বাংলার অর্থনীতিকে নতুন দিশা দেওয়ার জন্য অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনিও। পাশাপাশি জনৈক সুকান্ত পাল লিখেছেন, ‘দিদির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলার ঘরে ঘরে প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। একটার পর একটা প্রকল্পে তিনি বাংলা এবং বাংলার মানুষকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। আমাদের গর্ব দিদি।’