একদিকে যখন ৩৭০ ধারা বিলোপে কাশ্মীর নিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে মোদী সরকারকে। তেমনি এনআরসিতে ইস্যুতে আসাম নিয়েও চলছে জোর বিতর্ক। এরই মধ্যে নাগরিক পঞ্জী নিয়ে এবার ‘সুপ্রিম’-ধাক্কা খেল আসামের বিজেপি সরকার এবং কেন্দ্র৷ শীর্ষ আদালত নাগরিক পঞ্জী(এনআরসি) তালিকা প্রকাশের জন্য আসাম ও কেন্দ্রীয় সরকারকে আর একদিনও বেশি সময় দিতে চাইছে না৷
মঙ্গলবার আদালত খোলার পরেই শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি আর এফ নরিম্যানের বিশেষ ডিভিশনাল বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়৷ আগামী ৩১ আগস্ট এনআরসিতে বাতিল হওয়া মানুষদের নামের তালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা। একমাত্র অনলাইনেই এই তালিকা প্রকাশ করতে হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। এর পাশাপাশি আধার কার্ডের মতো অসমের এনআরসি সংক্রান্ত তথ্যও গোপন রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দ্বয়।
শুধু তাই নয়। সেই সঙ্গে তাঁরা একথাও স্পষ্ট করে দেন যে এই নিয়ে বিভিন্ন আইনি সমস্যা এলেও এনআরসি প্রক্রিয়া আর নতুন করে শুরু হবে না। বিচারপতিরা বলেন, ‘এনআরসিতে নথিভুক্ত ও বাতিল নামের তালিকার সার্টিফায়েড হার্ড কপি একমাত্র জেলা অফিসগুলিতেই থাকবে। আর ৬৬ এ জাজমেন্টের ধারা অনুযায়ীই আপডেট করা হবে এনআরসির তালিকা।’
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুলাইয়ের শুনানিতে আসামে নাগরিক পঞ্জী প্রকাশের সময়সীমা এক মাস বাড়ায় সুপ্রিম কোর্ট। এর ফলে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশে সময় বদলে যায় ৩১ জুলাই থেকে আগস্ট মাসের ৩১ তারিখে। জাতীয় নাগরিকপঞ্জির কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলার আবেদনের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেয় সর্বোচ্চ আদালত। ৭ আগস্টের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়ে নিজেদের বক্তব্য প্রকাশ করতে বলে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর ডিভিশন বেঞ্চ।
কেন্দ্র এবং আসাম সরকারের দাবি ছিল, জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে এমন অনেকেই বাদ পড়েছেন, যাঁরা প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় নাগরিক। আবার অনেক অনুপ্রবেশকারী বা প্রবাসীও তালিকায় ঢুকে পড়েছেন। বিশেষত অসম-বাংলাদেশ সীমান্তের কিছু এলাকায় স্থানীয় আধিকারিকদের যোগসাজশে এমনটা হয়েছে। তাই আরও অন্তত ২০ শতাংশ নাগরিকের নথিপত্র খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা প্রয়োজন। সেই জন্যই অতিরিক্ত সময় লাগবে। তাই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দিন পিছিয়ে দেওয়া হোক।
যদিও ২৩ তারিখের ওই শুনানিতে এনআরসি কো-অর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলা জানান, নতুন করে আর নথিপত্র যাচাইয়ের প্রয়োজন নেই। কারণ ইতিমধ্যেই তালিকা থেকে বাদ পড়া এবং তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া ৭২ লক্ষ মানুষের নথিপত্র দ্বিতীয়বার যাচাই করা হয়েছে। তবে খসড়া তালিকা থেকে চূড়ান্ত তালিকা তৈরিতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে। সেই আর্জি মেনেই আরও এক মাস সময় বাড়িয়ে দেয় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। তবে এবার বিচারপতি নরিম্যান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ৩১ আগস্ট অনলাইনে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতেই হবে৷