বাংলার শাসক দলের নেতা-নেত্রীরা সবাই কোমর বেঁধে নেমেছেন তাঁদের প্রিয় নেত্রীর নির্দেশ মতো। রাজ্যের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যেটুকু দূরত্ব তৈরি হয়েছে সেটুকুও দূরত্ব রাখতে চান না দল নেত্রী। তাই সবার কাছে পৌঁছে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁর দলের অনুগামী নেতা-কর্মীদের। তাই সকলেই তাঁদের প্রিয় ‘দিদি’-র কথামতো কাজ করতে ব্যস্ত। যে যাঁর নিজের মতো করে জন সংযোগের উপায় বার করছেন। লক্ষ্য একটাই। আর তা করতে গিয়েই অন্য মেজাজে ধরা দিলেন মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। পুরুলিয়ায় জনসংযোগে গিয়ে আমজনতার আবদার মেনে এক মহিলার সঙ্গে ‘সই’ পাতালেন মন্ত্রী।
সোমবার পুরুলিয়ার মানবাজার বিধানসভার হুড়া ব্লকের দলদলি গ্রামে দলের এই কর্মসূচিতে গিয়ে একেবারে রীতিনীতি মেনে ‘সই’ পাতানোর পর্ব চলে। রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর সঙ্গে ওই গ্রামের বাসিন্দা চিন্তামণি মাহাতোর এই ‘ফুল’(সই) পাতানোর দৃশ্য এখন সোশাল সাইটে ভাইরাল। দুর্বা ঘাস, চন্দনের ফোঁটায় একে অপরকে বরণ। সেইসঙ্গে মিষ্টি মুখ। শঙ্খধ্বনি থেকে মহিলাদের উলু দেওয়া। ‘সই’ পাতানোর পর্বে বাদ গেল না কিছুই। সবে মিলিয়ে এই ‘ফুল’ পাতানোর কাজে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি যেন অন্য মাত্রা পেল। রাজ্যের মন্ত্রী এভাবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে ‘সই’ পাতানোয় উচ্ছ্বসিত এদিন মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা দলের নেতা-কর্মীরাও।
মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু বলেন, “আমাদের গ্রাম বাংলায় এই ‘ফুল’ বা ‘সই’ পাতানো একটা রীতি। ছোটোবেলায় আমরা এইভাবে ‘ফুল’ পাতাতাম। দুই পরিবারের মধ্যে একটা মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠত। দলের কর্মসূচিতে এসে যে এমন ঘটনা ঘটবে তা ভাবতেই পারছি না। আমিও ভীষণ খুশি। আসলে এইসব সংস্কৃতি এখন হারিয়ে যাচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, গত রবিবার দ্বিতীয় দফার গণপ্রচার কর্মসূচি শুরু করেন মানবাজার এক নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণি কল্যান বিভাগের মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। রাত পর্যন্ত ওই গ্রামের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ করেন মন্ত্রী। সমস্যার কথা শুনে তা খাতায় তালিকাভুক্ত করেন। গুচ্ছ সমস্যার মধ্যে বেশ কয়েকটি সেখানে দাঁড়িয়ে সমাধান করেন। সমস্যা খুব দ্রুত মেটানোর আশ্বাস দেন। তারপরেও যদি মেটাতে না পারেন তখন ‘দিদিকে বলো’র ফোন নম্বরে জানানোর পরামর্শও দিয়ে আসেন তিনি। একেবারে সোজাসাপটাভাবে মন্ত্রীর কথা শুনে অভিভূত হয়ে যান গ্রামের বাসিন্দারা। আর তাই সোমবার তাঁর কাছে সই হওয়ার আবদার আসে চিন্তামণি মাহাতোর কাছে। তাঁকে নিরাশ করেননি মন্ত্রী। এই নজিরবিহীন ঘটনা নেটদুনিয়ায় প্রশংসা কুড়িয়েছে।