১৭ লাখ কোটি টাকায় কটা শূন্য থাকে জানেন? বা জানেন তাজ হোটেলের কোটি টাকার সম্পত্তি বেঁচে দেওয়ার কারণ? আচ্ছা সুপারপাওয়ার হওয়ার দৌড়ে তিন ধাপ নেমে গেলে কী হয় জানেন? শুনছেন? আপনার চাকরিটা গেলে কিন্তু ওয়াইফাই এর টাকা দিতে ও মুশকিল হবে। সময় থাকতে ফেসবুক টুইটারে এই খবর গুলো ও শেয়ার করুন। তাগিদটা আপনার বা আমার।
কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ প্রতিপন্ন করা শেষ৷ আড়াআড়িভাবে পক্ষ আর প্রতিপক্ষ হয়ে গেছি। এবার এই এক হপ্তাতে এমন কিছু খবর কবর খুঁড়ে বের করি আসুন।
খবরগুলো এদিক ওদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। মাটি চাপা দেওয়া হয়নি সম্পূর্ণভাবে। হওয়া সম্ভব ও না। কিন্তু দেশমাতৃকার জন্য রাষ্ট্রের পাশে দাঁড়ানো সম্পূর্ণ হলে আসুন এই খবর গুলো জানি, জেনে প্রতিবাদ করি বা বদলে দেওয়ার আহ্বান জানাই রাষ্ট্রকে। দেশত্ববোধ এটাও।
শুনুন মান্যবর। বাজেট ঘোষণার পরের দিন থেকে আজ অবধি দেশের সবচেয়ে বড় শেয়ার বাজার মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জ এর বিনিয়োগকারীরা ১৭ লাখ কোটি টাকা লোকসান করেছে। ১৭,০০০০০,০০০০০০০ টাকা। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা লগ্নি করতে চাইছে না সরকারের পলিসিগত পরিবর্তনের জন্য৷ এতে আপনার লাভ বা ক্ষতি আপনি টের পাবেন না। কিন্তু বাজার আরো দুর্বল হবে, মুদ্রাস্ফীতি বাড়লে কী কী হয় আপনি জানেন। চাঁদে ভারতের হাঁটিহাঁটি থেকে সংবিধানের খুঁটিনাটি, সব তো বোঝেন আপনি।
বিশ্বব্যাংকের সূচক অনুসারে ভারত বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে এ বছর সপ্তম স্থানে নেমে এসেছে। ২০১৭ সালে ছিল পাঁচ নম্বরে। আমরা স্বপ্ন দেখছিলাম চিন আর জাপানের সাথে টক্কর দেওয়ার। তারা অবশ্য বৃদ্ধি কাকে বলে দু বছরে দেখিয়ে দিয়েছে। ওদের অবশ্য মন্দির মসজিদ বানাবার তাগিদ নেই। কারোকে পাকিস্তানে পাঠাবার ও প্রয়োজন নেই।
মুম্বাইয়ে তাজ হোটেল চেনেন তো? মানে যেখানে কাসাব ঢুকে ২৬/১১ এর সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছিল৷ সেই তাজ হোটেলের বেশ কিছু সম্পত্তি বেচে দেওয়া হচ্ছে। টাটা কস্ট কাটিং শুরু করেছে। এতে আপনার চালে ডালে কোন পরিবর্তন নেই কিন্তু বৃদ্ধি থেমে যাচ্ছে, বিনিয়োগ আসছে না, পুঁজিবাদ মার খেতে চলেছে সেটা সবচেয়ে আগে আঁচ করে হোটেল শিল্প। তাজে বুকিং কমছে, আগের মতো টাকা ওড়ানো কমছে মানে বিলাশবহল জীবনযাপন করার লোক কমছে। শিল্প পড়ছে।
টাকার দাম রেকর্ড কমেছে, শেয়ার বাজার নিচের দিকে, বৃদ্ধি আর জিডিপি অসুস্থ। বাজাজের মতো কোম্পানির মালিক বলছে দেশের অর্থনীতির হাল খারাপ। মানে আপনার মতো বুদ্ধিমান লোক মাত্রেই বুঝবে সার্ভিস সেক্টরে এর প্রভাব পরবে আর তার মানে আপনার পরের বারের ইনক্রিমেন্টটা আদপেই চীনেবাদাম কেনার টাকা হবে। বেকার ও হতে পারেন। মানে সারাদিন অফুরন্ত সময় মন্দির নিয়ে আলোচনা করার৷
ক্যাফে কফি ডে-র মালিক আত্মহত্যা করেছে৷ অভিযোগ লাইসেন্স রাজের কারণে ব্যবসা চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। ধার, দেনা, চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছিল। বিজয় মাল্যদের অবশ্য এসব ভাবতে হয়নি। বিদেশ পালিয়েছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের টাকা মেরে। আপনার আর আমার টাকা। ওটাকায় মন্দির বানানো যেত। যায়নি কারণ কালো টাকা ও ঘরে ফেরত আসেনি।
কবর খুঁড়ুন, খবর করুন এবার। যে গতিতে সংখ্যাগুরু বিপদে আছে সেই অশনিসংকেত টুইট করেন সে গতিতে টুইট করুন আপনার চাকরি যাওয়ার ভয়ের কথা। ভয় কারণ আদপে যায়নি, যেতে পারে। কিন্তু যতক্ষণে আপনি বুঝতে পারবেন, অনেক দেরি হয়ে গেছে। দেশের হয়ে গলা ফাটানো ভালো। এপিগ্লটিসে দলা পাকানো দেশত্ববোধ ভালো কিন্তু দেশের বৃদ্ধির দাবীতে বিক্ষোভ ও দেশত্ববোধ।
পুনশ্চঃ গত এক হপ্তা আমাকে ও বিভিন্ন লোক বিভিন্ন নামে দেগেছে। দেগে দেওয়ার সময় এখন। তাই মোটে ও কিছু মনে করিনি। আমাকে বিজেপি মনে করে বাম, বাম মনে করে তৃণমূল আর তৃণমূল মনে করেছে নব্যডান। আসলে এদের থেকে ও জটিল বোধহয়৷ আপনি সরল হবেন না, দেশ চুরি হলে আটকে দিন। দেশের জন্যই সবটা কিন্তু।
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত