দেশে বাড়ছে অসহিষ্ণুতা। এই মর্মে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। দলিত ও মুসলিমদের গণপিটুনির ঘটনায় কড়া শাস্তি দাবি করেছেন ৪৯ জন বুদ্ধিজীবী। যা নিয়ে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে দেশজুড়ে। আর এরপরই শ্যাম বেনেগাল, অপর্ণা সেন, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অনুরাগ কাশ্যপদের সঙ্গে রয়েছেন কৌশিক সেন, তাঁর পুত্র ঋদ্ধি সেনও। এই চিঠি পাঠানোর প্রেক্ষিত ফুঁসে উঠে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলে ওঠেন, ‘বিশিষ্টরাই তো প্রকৃত দেশদ্রোহী।’ আর দিলীপ ঘোষের এই নজিরবিহীন আক্রমণের পরেই প্রাণনাশের হুমকি পেলেন কৌশিক সেন। তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ, তাঁর মোবাইলে ফোন করে কোনও এক ব্যক্তি প্রাণনাশের হুমকি দেন। কলকাতা পুলিশের কাছে এনিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন কৌশিক সেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পাঠানো ওই চিঠির সূত্র ধরে তাঁর কাছে ফোন আসে। অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি অজানা একটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে তাঁকে, যার ভিত্তিতে এই অভিনেতা যাদবপুর থানায় যোগাযোগ করেছেন ও মৌখিকভাবে পুলিশকে ঘটনাটি জানিয়েছেন। এই ফোনকলটির বিষয় তদন্ত করে দেখতে হবে বলে জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশ। যে নম্বর থেকে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ, সেই নম্বরটিও তিনি পুলিশকে দিয়েছেন।
যেভাবে কৌশিক সেনের মত এমন এক বিশিষ্ট অভিনেতাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হল তাতে স্তম্ভিত সকলে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে তাহলে কি মোদীর বিরুদ্ধে কথা বললেই তাঁকে এভাবে থামিয়ে দিতে হবে? দেওয়া হবে খুনের হুমকি? বিজেপির বিরুদ্ধাচারণ করলেই কি তাঁর কন্ঠরোধ করে দেওয়া হবে? এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে চারপাশে।
উল্লেখ্য, গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অসহিষ্ণুতা নিয়ে খোলা চিঠি দেওয়ার পর বিকেলে সাংবাদিক বৈঠক করে অপর্ণা সেন জানান, ভারতের সংবিধানে বাকস্বাধীনতা স্বীকৃত। সরকারের বিরুদ্ধাচরণ মানে এই নয় সে দেশদ্রোহী। এক দেশের মধ্যে মতের পার্থক্য থাকতেই পারে। বরং সুস্থ গণতন্ত্রের রাষ্ট্রে প্রতিবাদের ভাষা থাকে। অভিনেত্রীর এমন মন্তব্যের পরও কৌশিক সেনকে হুমকি দেওয়া অত্যন্ত নিন্দনীয় কাজ বলে মনে করছেন বুদ্ধিজীবীরা।