চেষ্টা চলছিল লোকসভা ভোটের বহু আগে থেকেই৷ তবে ফলপ্রকাশের পর একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরতেই কোমড় বেঁধে নামে গেরুয়া শিবির। অবশেষে টানা ১৭ রজনী পার করার পর ‘ঘোড়া কেনাবেচা’, দফায় দফায় বিধায়কদের ইস্তফা আর আস্থা ভোট নিয়ে চলা কর্ণাটকের রাজনৈতিক নাটকের যবনিকা পতন ঘটেছে গতকাল। কুমারস্বামী সরকারকে ৬ ভোটে হারিয়ে ক্ষমতা দখলের পথে বিজেপি। আর চতুর্থবার কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পথে রাজ্য বিজেপি সভাপতি বি এস ইয়েদুরাপ্পা।
সরকার গড়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘দিল্লীর নির্দেশের অপেক্ষায় আছি। নির্দেশ পেলে যে কোনও সময়ে পরিষদীয় বৈঠক ডেকে রাজ্যপালের কাছে সরকার গড়ার দাবি জানাতে পারি।’ রাজ্যের সঙ্ঘ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক সেরে, তাঁদের ‘আশীর্বাদ’ নেওয়ার পরই এই কথা বলেছেন ইয়েদুরাপ্পা। তাতে সায় দিয়ে কর্ণাটকের বিধায়ক জে সি মধুস্বামী বলেছেন, ‘জাতীয় সভাপতি অমিত শাহ বললে তবেই পরিষদীয় বৈঠক ডাকা যাবে।’
এদিকে, মাত্র ১৪ মাসেই সরকারের পতনে ভবিষ্যতে কংগ্রেসের সঙ্গে জেডিএস–এর জোট থাকবে কিনা, তাই নিয়ে জাগছে প্রশ্ন। জোর দিয়ে কিছু বলছেন না বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী। তিনি জানিয়েছেন, ‘কর্ণাটকের জনগণের বিশ্বাস অর্জনে জোর দিচ্ছি। দলেরও উন্নয়ন দরকার। আপাতত সেইসবই আমাদের ভাবনার বিষয়।’ কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের কী হবে? কুমারস্বামীর জবাব, ‘জানি না। দেখা যাক। কংগ্রেস নেতারা ভবিষ্যতে কী করবেন, সেটা ওঁদের বিষয়। এই নিয়ে কোনও কথা হয়নি।’
প্রসঙ্গত, গত বছর কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ত্রিশঙ্কু হওয়ায় জোট বেঁধে সরকার গড়ে রাজ্যে রাজনীতিতে কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস-জেডিএস। লোকসভা নির্বাচনে দুটি দলের সাকুল্যে একটি করে আসন জোটে। তৃণমূল স্তরের কর্মীরা বুঝিয়ে দেন তাঁরা এই জোটে খুশি নন। তার ওপর বিজেপির তরফে চলছিল হর্স ট্রেডিং। অতঃপর লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের দু’মাস না পেরোতেই পড়ে গেল কর্ণাটক সরকার।
উল্লেখ্য, মাত্র একজন বসপা বিধায়ক ছিলেন কর্ণাটকে। এন মহেশ। গতকালের আস্থা ভোটে গরহাজির থাকায় তাঁকে বহিষ্কার করেছেন দলনেত্রী মায়াবতী। শুধু তাই নয় নিজের টুইটারে মায়া লেখেন, ‘যেভাবে সাংবিধানিক নিয়মকে পাশ কাটিয়ে টাকা এবং ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বিরোধীদের থেকে সরকারের দখল নিল বিজেপি, তা গণতন্ত্রের ইতিহাসে কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। যা হল তার জন্য কোনও নিন্দাই যথেষ্ট নয়।’