চেষ্টা চলছিল লোকসভা ভোটের বহু আগে থেকেই৷ নয় নয় করে তাও মাস সাতেক তো হবেই। তবে লোকসভা ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরতেই কোমড় বেঁধে নামে গেরুয়া শিবির। আর তারপরেই ‘ঘোড়া কেনাবেচা’, আদালতে মামলা, আস্থা ভোটের নামে একের পর এক নাটকের পর অবশেষে কর্ণাটকে সফল ‘অপারেশন লোটাস’। বিজেপির পরবর্তী লক্ষ্য এবার মধ্যপ্রদেশ। আর সম্ভব হলে রাজস্থান। কর্ণাটকে আস্থাভোটে কংগ্রেস-জেডিএস সরকার হেরে যাওয়ার পর মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার বিরোধী দলনেতার মন্তব্য বা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্য সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। জানা গেছে, শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষায় রয়েছেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি নেতারা।
মধ্যপ্রদেশের বিরোধী দলনেতা গোপাল ভার্গব বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘দলের শীর্ষ নেতৃত্বের ১ ও ২ নম্বরের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। তাঁরা নির্দেশ দিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আপনার সরকার ফেলে দেব।’ যদিও দেরি না করে মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ জবাবে বলেছেন, ‘আপনাদের নম্বর ১ ও ২ নম্বর ভালই জানেন সব কিছু। তাই কোনও নির্দেশ দেননি।’ চ্যালেঞ্জের ঢঙে তাঁর পাল্টা হুঁশিয়ারি, ‘হিম্মত থাকলে অনাস্থা প্রস্তাব আনুন।’ আবার মধ্যপ্রদেশ সরকারের শিক্ষা ও ক্রীড়ামন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা জিতু পাটোয়ারির দাবি, ‘এটা কমল নাথের সরকার, কুমারস্বামীর নয়। মধ্যপ্রদেশে বিধায়ক কেনা-বেচা করতে হলে সাতবার জন্ম নিতে হবে!’
এর আগেই বিজেপি নেতা শিবরাজ সিং চৌহান ইঙ্গিতপূর্ণভাবে বলেছিলেন, কর্ণাটকের মতো মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেস সরকার পড়ে গেলে তার জন্য বিজেপি নয়, দায়ী থাকবেন কংগ্রেস নেতারাই। কারণ, সরকারের অভ্যন্তরে গোলযোগ চলছে। সপা-বসপা সমর্থন তুলে নিলে তার জন্য বিজেপিকে দায়ী করা ঠিক হবে না। তবে গতকাল মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় হোঁচট খেতে হয়েছে বিজেপিকেই। কারণ একটি বিলকে সমর্থন জানিয়েছে ২ বিজেপি বিধায়ক। বিষয়টি নিয়ে খোঁচা দিয়ে কমল নাথ বলেন, ‘বিজেপি তো প্রতিদিন বলে আমাদের সরকার সংখ্যালঘু। যে কোনও সময় পড়ে যাবে। কিন্তু আজ বিজেপি–র ২ বিধায়ক অপরাধ আইনের সংশোধনী বিলের ভোটাভুটিতে আমাদের সমর্থন করেছেন।’
প্রসঙ্গত, লোকসভা নির্বাচনে বিপুল গরিষ্ঠতা পাওয়ার পর রাজ্যে রাজ্যে বিধায়ক ভাঙাতে নেমেছে বিজেপি। গোয়ায় কংগ্রেসের বিধায়কেরা সদলবলে গেরুয়া শিবিরে। মধ্যপ্রদেশে ২৩০ আসনের ১১৪টি পেয়েছিল কংগ্রেস। গরিষ্ঠতার থেকে ২টি আসন কম। পরে বহুজন সমাজ পার্টির ২, সমাজবাদী পার্টির ১ ও ৪ নির্দল বিধায়কের সমর্থনে সরকার গড়ে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা কমল নাথ। তবে ওই ৭ বিধায়ককে ভাঙাতে পারলেই সরকার পড়ে যাবে। সেই চেষ্টা শুরু করেছে বিজেপি। তাদের বিধায়ক ১০৯। রাজস্থানের অবস্থা অবশ্য এমন নয়। সেখানে ২০০ আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ১১২। তারপর বিএসপির ৬ বিধায়ক-সহ মোট ৯ জনের সমর্থন পেয়েছে সরকার।