এক খুদে হস্তীশাবককে প্রাণের বাজি রেখে বাঁচিয়ে নজির গড়লেন তুলসীপাড়ার বাসিন্দারা। চা বাগানের জলাধারে হাবুডুবু খেতে দেখা যায় হস্তীশাবকটিকে। শুক্রবার রাত এগারোটা নাগাদ হাতিদের আর্ত চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। কিন্তু আতঙ্কে কেউ ঘর ছাড়তে সাহস করেননি। শনিবার ভোরেও জারি ছিল ওই আর্তনাদ। অস্বাভাবিক কিছু একটা ঘটেছে আন্দাজ করে এলাকার বাসিন্দারা বাগানের সাত নম্বর সেকশনের পাকা জলাধারে একটি ছোট্ট হাতির বাচ্চাকে খাবি খেতে দেখেন। জলাধারের পাশে তখনও ঠায় দাঁড়িয়ে উদ্বিগ্ন মা হাতি।
উদ্ধারের জন্য কেউ কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলেই তেড়ে আসছিল মা হাতি। তবে টানা তিন ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে জয়ী হয় মানুষের বুদ্ধি। বীরপাড়া-লঙ্কাপাড়া রাজ্য সড়ক মেরামতির কাজের জন্য ঘটনাস্থলের অদূরেই ছিল একটি পে-লোডার। শাবকটির প্রাণ বাঁচাতে জলধারের সামনে নিয়ে আসা হয় সেটিকে। কিন্তু ওই যন্ত্রদানবকে দেখা মাত্রই খেপে ওঠে মা হাতি। টানা ছয় ঘণ্টা সাত ফুট গভীর জলাধারে খাবি খেয়ে তখন শাবকটির প্রাণ যায় যায় অবস্থা। এলাকার মানুষের মিলিত হল্লায় একসময় ওই হাতি খানিকটা দূরে সরে যেতেই জলাধারটির পূর্ব প্রান্তের দেওয়াল ভেঙে দেন পে লোডারের চালক। জল বেরিয়ে যেতেই মরিয়া চেষ্টায় ডাঙায় উঠে আসে ছোট্ট হাতি।
জল থেকে ওঠার পর স্থানীয় মানুষরাই শাবকটিকে তার মায়ের কাছে পৌঁছে দেন। শাবককে ফেরত পেয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই জঙ্গলে অদৃশ্য হয় মা হাতি। দলের অন্যান্য সদস্যরা জঙ্গলের ভিতরে দাঁড়িয়ে তখন অপেক্ষা করছিল। সাধারণত একবার মানুষের ছোঁয়া লাগলে কোনও হস্তীশাবককে দল আর ফিরিয়ে নেয় না। তবে তুলসীপাড়ায় দেখা গেল ব্যতিক্রমী ছবি। বিশিষ্ট হাতি বিশারদ পার্বতী বরুয়াও বলেন, ‘সত্যি বিরল ঘটনা।’