ঘরের মাঠে জয়ের রাস্তায় ফিরল কলকাতা নাইট রাইডার্স। সোমবার দিল্লী ক্যাপিটালসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখলেন শ্রেয়স আয়ারেরা। এদিন টস জিতে ইডেনের বাইশ গজে ব্যাট করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন দিল্লীর অধিনায়ক পন্থ। তাঁর সেই সিদ্ধান্ত ফলপ্রসূ হল না দলের ব্যাটিং ব্যর্থতায়। দিল্লীর ইনিংস শেষ হয় ৯ উইকেটে ১৫৩ রানে। নয় নম্বরে নেমে কুলদীপ সিংহ ৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস না খেললে দিল্লীর অবস্থা আরও শোচনীয় হতে পারত। বৈভব অরোরা, হর্ষিত রানা, বরুণ চক্রবর্তীদের দাপটে ধারাবাহিক ভাবে উইকেট হারায় দিল্লী। পৃথ্বী শ দলে ফিরলেও রান পেলেন না সেভাবে। তিনি আউট হলেন ১৩ রানে। অন্য ওপেনার বিপজ্জনক জ্যাক ফ্রেজার ম্যাকগার্কও (১২) ব্যর্থ হলেন ইডেনে। ভাল শুরু করেও চেনা ইডেনে বড় রান করতে পারলেন না অভিষেক পোড়েল। ২টি চার এবং ১টি ছয়ের সাহায্যে করলেন ১৫ বলে ১৮। আবার ব্যর্থ সাই হোপ (৬)। ৬৮ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পরই লড়াই থেকে কার্যত হারিয়ে যায় দিল্লী। চাপের মুখে দলকে ভরসা দিতে পারলেন না অধিনায়ক পন্থও। তিনি করলেন ২০ বলে ২৭। মারলেন ২টি চার এবং ১টি ছক্কা। অক্ষর পটেল (১৫), ট্রিস্টান স্টাবস (৪), কুমার কুশাগ্ররা (১) আরও চাপ বৃদ্ধি করলেন। কুলদীপকে কিছুটা সঙ্গ দিলেন রাসিখ সালাম দার। ১০ বলে ৮ রান করলেন জম্মু-কাশ্মীরের ক্রিকেটার। শেষে লিজাড উইলিয়ামস অপরাজিত থাকলেন ১ রান করে। ২২ গজের অন্য প্রান্তে অপরাজিত থাকলেন লড়াকু কুলদীপ। ৫টি চার এবং ১টি ছক্কা এল তাঁর ব্যাট থেকে।
এদিন নাইটদের সফলতম বোলার বরুণ চক্রবর্তী। ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিলেন তিনি। ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন হর্ষিত। ২৯ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন বৈভব। ২৪ রানে ১ উইকেট সুনীল নারাইনের। এ দিনও কলকাতার সমর্থকদের হতাশ করলেন মিচেল স্টার্ক। ওভারে ৪৩ রান বিলিয়ে পেলেন মাত্র ১টি উইকেট। অজি পেসারকে দিয়ে ৪ ওভার বল করাতে পারলেন না শ্রেয়স। শেষ ওভারে বাধ্য হয়ে আক্রমণে আনতে হয় আন্দ্রে রাসেলকে। জয়ের জন্য ১৫৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ঝোড়ো মেজাজেই ইনিংস শুরু করলেন কেকেআরের দুই ওপেনার নারাইন এবং ফিল সল্ট। এদিন ইডেনে বেশি আগ্রাসী ছিলেন ইংরেজ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। দিল্লীর কোনও বোলারকেই রেয়াত করলেন না সল্ট। ২৬ বলে অর্ধশতরান পূর্ণ করলেন তিনি। মাঠের চার দিকে শট মারলেন। অক্ষরের বলে আউট হওয়ার আগে নারাইন করলেন ১০ বলে ১৫। মারলেন ৩টি চার। তারপর সাজঘরে ফিরলেন সল্টও। কেকেআরের দুই ওপেনারকেই আউট করলেন অক্ষর। ইংরেজ ক্রিকেটারের ব্যাট থেকে এল ৩৩ বলে ৬৮ রান। মারলেন ৭টি চার এবং ৫টি ছয়। দিল্লীর বিরুদ্ধে ব্যাটিং অর্ডারের চমক দিল কেকেআর। তিন নম্বরে নামিয়ে দেওয়া হল রিঙ্কু সিংহকে। তবে তিনি এদিন রান পেলেন না। ১১ বলে করলেন ১১ রান। পরপর ৩ উইকেট হারানোর পর কেকেআরের রান তোলার গতি বেশ কমে যায়। তাতে অবশ্য বড় কোনও সমস্যা হয়নি লক্ষ্য কম থাকায়। অধিনায়ক শ্রেয়স এবং বেঙ্কটেশ আয়ার তেমন ঝুঁকি না নিয়েই কেকেআরকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে গেলেন ব্যাট হাতে। শ্রেয়স অপরাজিত থাকলেন ২৩ বলে ৩৩ রান করে। বেঙ্কটেশ অপরাজিত থাকলেন ২৩ বলে ২৬ রান করে। বেঙ্কটেশ মারলেন ৩টি চার এবং ১টি ছয়। বেঙ্কটেশের ব্যাট থেকে এল ২টি চার এবং ১টি ছয়। অক্ষর ছাড়া দিল্লীর কোনও বোলারই এ দিন নজর কাড়তে পারলেন না। অক্ষর ২৫ রানে ২ উইকেট নিলেন। ৩৮ রানে ১ উইকেট উইলিয়ামসের। কুলদীপ ৩৪ রান দিলেও উইকেট পেলেন না। ম্যাচের সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া হয় বরুণ চক্রবর্তীকে।