রবিবারের দুপুরে চোখ বেঁধে গঙ্গা পেরোচ্ছিলেন তিনি। সবাই দমবন্ধ করে দেখছেন জাদুকর ম্যানড্রেকের সেই কসরত। আর তখনই জলে তলিয়ে গেলেন তিনি। প্রথমে দর্শক ভেবেছিলেন এটাই তাঁর জাদু। খানিক সময় কেটে যাওয়ায় ভুল ভাঙল। রবিবার সকালে ম্যাজিক দেখাতে গিয়ে গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছিলেন জাদুকর চঞ্চল লাহিড়ী। দীর্ঘক্ষণ পেরিয়ে গেলেও এখনও খোঁজ মেলেনি জাদুকর ম্যানড্রেক তথা চঞ্চল লাহিড়ীর। আজ সকাল থেকে ফের গঙ্গাবক্ষে শুরু হয়েছে তল্লাশি।
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগেই লালবাজারে একটি চিঠি পাঠান চঞ্চল লাহিড়ী। তিনি নিজেকে জাদুকর ম্যানড্রেক বলে পরিচয় দেন। চিঠিটিতে লেখা ছিল যে, রবিবার দুপুর দেড়টার সময় তিনি ‘লঞ্চের উপর একটি জাদু প্রদর্শনী’র আয়োজন করবেন। তার জন্য কোনও টিকিটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। জনগণকে বিজ্ঞাপন দিয়ে জানানোও হচ্ছে না। শুধু তিনি ও তাঁর ম্যাজিক টিমের কয়েকজন সদস্য লঞ্চে থাকবেন। কিন্তু লালবাজারকে দেওয়া চিঠিতে জাদুকর চঞ্চলবাবু একবারও উল্লেখ করেননি যে, তিনি হাত-পা বেঁধে নেমে খেলা দেখাবেন। কী ধরনের খেলা বা ম্যাজিক দেখাবেন তাও উল্লেখ করেননি তিনি।
লালবাজারের অভিযোগ, এর আগেও গঙ্গায় তাঁর ম্যাজিক দেখানো নিয়ে গোলমাল হয়েছে। অভিযোগ, সেই কারণেই এবার পুলিশকে এড়িয়ে যেতেই অনুমতিপত্রে জানানো হয় দুপুর দেড়টার সময় ম্যাজিক দেখানো হবে। এমনকী, ম্যাজিকটি যে তিনি গঙ্গায় নেমে দেখাবেন, সেই বিষয়টিও পুলিশকে জানাননি। অথচ দেড়টার বদলে দুপুর বারোটার মধ্যেই তিনি চলে যান হাওড়া ব্রিজে। লালবাজারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সময়ের হেরফের হলে জলপুলিশের লঞ্চের কিছু করার থাকে না। কারণ, মাঝগঙ্গায় যাওয়ার পর লঞ্চের পক্ষে গাড়ির মতো পার্কিং করা সম্ভব হয় না।
দুপুর বারোটা নাগাদ এই ম্যাজিক দেখানোর জন্য ম্যানড্রেক ক্রেন নিয়ে চলে আসেন হাওড়া ব্রিজে। দুপুর সাড়ে বারোটার আগেই মিলেনিয়াম পার্কের জেটি থেকে রওনা দেয় জাদুকরের ভাড়া করা লঞ্চটি। ম্যানড্রেককে গঙ্গায় নামিয়ে দেওয়ার পর যাঁরা তাঁকে তোলার জন্য ছিলেন, তাঁদের শরীরে লাইফ জ্যাকেট ছিল কি না, অথবা তাঁদের যথেষ্ট প্রশিক্ষণ ছিল কি না, সেই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।