মমতাই মেটালেন সাত দিন ধরে রাজ্য জুড়ে চলা সংকট। আন্দোলন, প্রস্তাব, পাল্টা প্রস্তাব থেকে লাইভ কভারেজ। অবশেষে নবান্নে সোমবার জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে গলল বরফ। বিকেল সাড়ে চারটেয় শেষ হয় বৈঠক।
আজকের এই বৈঠকে মোট ১০টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে-
১। গোটা রাজ্য একটি জরুরিভিত্তিক নম্বর এবং ই-মেল আইডি চালু করা হবে যেখানে বিপদে পড়লে চিকিৎসকরা জানাবেন।
২। ভবিষ্যতে এই ধরনের হামলার ঘটনা যাতে না ঘটে, সে দিকে নজর রাখবে প্রশাসন। যদি ঘটেও থাকে, তা হলে সঙ্গে সঙ্গে কড়া পদক্ষেপ।
৩। হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নয়নে যে যে প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, সেগুলি কী পরিস্থিতিতে রয়েছে, কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তা যাচাই করা হবে
৪। নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যাপারে পুলিশ পদক্ষেপ না করলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সাসপেন্ড।
৫। অনেক সরকারি হাসপাতালে গেট নেই। সর্বত্র গেট তৈরি হবে।
৬। জরুরি বিভাগে থাকবে একটি করে কোলাপসিবল গেট। তার ভিতরে দু’জনের বেশি রোগীর আত্মীয় ঢুকতে পারবে না।
৭। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে কলকাতা ও জেলায় জেলায় একজন করে নোডাল অফিসার রাখবে পুলিশ।
৯। রোগীদের আত্মীয়দের জন্য সরকারের যে গ্রিভ্যান্স সেল বা অভিয়োগ গ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে, সে গুলিকে আরও সক্রিয় ও দৃশ্যমান করা হবে।
১০। চিকিৎসকদের উপরে আক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেবে সরকার।
প্রসঙ্গত, এই বৈঠক নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। বৈঠকের লাইভ কভারেজ হবে কি হবে না তা নিয়ে একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ছিল অনিশ্চয়তা। তবে শেষ পর্যন্ত তাতে মুখ্যমন্ত্রী রাজি হয়ে গেলেও বৈঠক নির্দিষ্ট সময়ে শুরু করা যায়নি। কথা ছিল বৈঠক শুরু হবে বিকেল ৩টের সময়ে। দুপুর ২ টো ৪৫ মিনিট নাগাদ এনআরএস থেকে স্বাস্থ্য দফতরের বাসে চেপে জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধ দল রওনা দেয়। রাজ্যের ১৪টি মেডিক্যাল কলেজের ২৮ জন প্রতিনিধি ছিলেন বাসে। নবান্নে ২৮ জন ছাড়া আরও তিন চার জন প্রতিনিধির অনুমতি দেওয়া হয়।
বিকেল ৩টে ৩০ মিনিটে জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দল নবান্নে পৌঁছায়। মোট ৩১ জন প্রতিনিধি। বিকেল ৪টের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী এলে শুরু হয় বৈঠক। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও ছিলেন, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্যসচবি মলয় দে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। এছাড়াও প্রশাসনের পক্ষে ছিলেন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র। প্রশাসন-ডাক্তারদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ছিলেন প্রবীণ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় ও অভিজিৎ চৌধুরী।