ভোটের আগে সেনা-জওয়ানদের সাফল্যকে তুলে ধরে ক্ষমতায় ফিরলেও, মোদীর ‘আচ্ছে দিনে’ এবার পথে বসতে চলেছে খোদ কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর জওয়ানরাই। হ্যাঁ, মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে গত ৩১ মে থেকে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিএপিএফ) কয়েকশো কর্মীর অবসর ও পেনশন আটকে রয়েছে। জানা গেছে, পুলিশ বাহিনীর অবসরের সার্বিক বয়স নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি মোদী সরকার। আর তাই আটকে রাখা হয়েছে তাঁদের অবসর ও পেনশন।
প্রসঙ্গত, সিএপিএফের আওতায় রয়েছে , সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ), সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ), সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি) এবং ইন্দো-তিব্বতীয় সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি)। এই চার বাহিনীরই সদর দফতর রয়েছে দিল্লীতে। সংশ্লিষ্ট বাহিনীর পক্ষ থেকে অবসরের সময়, প্রক্রিয়া জানতে চেয়ে চিঠি-ইমেল এলেও কোনওরকম জবাব দিতে পারছে না দফতর। উল্টে এ ব্যাপারে সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত চার বাহিনীর পদস্ত আধিকারিকদের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং কর্মী ও প্রশিক্ষণ দফতর।
আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গত ৩১ মে থেকে চার বাহিনীর কনস্টেবল থেকে কমান্ডো পদমর্যাদার কয়েকশো কর্মীর অবসর প্রক্রিয়া এবং পেনশন সংক্রান্ত পেপার তৈরির কাজ আটকে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কিছু অবসরপ্রাপ্তকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত হয় ঘরে বসে থাকতে বলা হয়েছে, নয়তো অফিস আসতে বলা হয়েছে। আসলে গত জানুয়ারিতে দিল্লী হাইকোর্টের এই নির্দেশিকার পর থেকে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যেখানে চার বাহিনীর কর্মীদের অবসরের বিভিন্ন বয়স নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নীতির সমালোচনা করেছিলেন বিচারপতি। একটি মূল বাহিনীর মধ্যে দু’টো শ্রেণী তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছিল হাইকোর্ট।
পাশাপাশি, সরকারের এহেন সিদ্ধান্তে সিএপিএফ কর্মীদের মনোবল নষ্ট হয়ে যাবে বলেও জানায় আদালত। হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে গত ১০ মে সুপ্রিম কোর্টে ‘স্পেশাল লিভ পিটিশন’ দাখিল করে কেন্দ্র। সেখানে মোদী সরকার জানায়, নীতি নিয়ে সিদ্ধান্ত আদালতের বিবেচনাধীন নয়। যদিও, সেই পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। এ বিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করতে না চাইলেও তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, সিএপিএফের চার বাহিনীর কর্মীদের অবসরের বয়স ৫৭ বা ৬০ মধ্যে ঠিক করতে হবে।
আর সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশিকার পরই মনে করা হয়েছিল, মে মাসের মধ্যে সরকার বাহিনীর কর্মীদের অবসর নিয়ে পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু, তা হয়নি। আবার গত ৩০ মে শপথ নেয় নতুন সরকার। তখনও ভাবা হয়েছিল, শপথগ্রহণের এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন দ্বিতীয় মোদী সরকারের নয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও, ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও তা হয়নি। যার জেরে নিরাপত্তাবাহিনীর অবসর নিয়ে