বিজেপি ছাড়তে চান মণিরুল ইসলাম। নিজেই গেরুয়া শিবির থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে সোমবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি। মণিরুলের সরে দাঁড়ানোর ঘটনায় জোর ধাক্কা খেলেন মুকুল রায়। এই প্রথম বিজেপিতে বড় রকমের চাপে পড়ল মুকুল-লাইন।
সোমবার বীরভূমের লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন মনিরুল। লোকসভা ভোটের ফল বেরোনোর পর পরই তাঁকে ঘটা করে বিজেপি-তে সামিল করিয়েছিলেন মুকুল রায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়। কিন্তু মনিরুল বিজেপি-তে যোগ দেওয়া মাত্রই দলের অন্দর আন্দোলিত হয়ে যায়। রন্তিদেব সেনগুপ্তর মতো আরএসএসের ঘনিষ্ঠ নেতা থেকে শুরু করে বিজেপি-র পুরনো নেতা কর্মীরা প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানান। বিষয়টি জানানো হয় নাগপুরে সঙ্ঘের শীর্ষ নেতাদেরও। তাঁরাও আপত্তি জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এরপরেইএদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে মণিরুল বলেন, ‘আমাকে নিয়ে দলের মধ্যে অস্বস্তি থাকলে, নিজেই সরে যেতে রাজি আছি। আমার কোনও আপত্তি বা অসন্তোষ নেই’।
বিজেপি কর্মীদের বক্তব্য, দল ভাঙানোর এই খেলা শুরু করেছেন মুকুল রায়। লোকসভা ভোটে বাংলায় কিছুটা সফল হতেই বিজেপিতে বেনোজল ঢোকাতে শুরু করেছেন তিনি। দলে সংখ্যালঘু নেতা সামিল করতে গিয়ে এমন সব লোককে তিনি ধরে আনছেন যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ আছে। এই প্রসঙ্গেই বিজেপির সংখ্যালঘু বিদ্বেষ ঘোচাতে মুকুল রায়ের মণিরুলকে ধরে আনার উদাহরণ দিচ্ছেন তাঁরা।
বিজেপি সূত্রের খবর, মুকুলের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ আরএসএস-ও। গত শুক্রবার দিল্লীতে মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করেন সঙ্ঘের এক শীর্ষ নেতা। সেখানে ভবিষ্যতে বিজেপি-তে কাউকে সামিল করানোর ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় সেকথা সমঝে দেওয়া হয় মুকুলকে। এরপরেই মুকুলবাবুও সংবাদমাধ্যমে বলেন, মনিরুলকে কেন্দ্র করে দলের কারও কারও ভাবাবেগ হয়তো আহত হয়েছে। তা বিবেচনা করা হবে।
এই ঘটনার পরেই সাংবাদিক বৈঠক করে দল থেকে ইস্তফার দেওয়ার কথা জানালেন মণিরুল ইসলাম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আরএসএস-এর তীব্র আপত্তি থাকাতেই সরতে হচ্ছে মণিরুলকে। আর মণিরুলের সরে দাঁড়ানোর ঘটনায় জোর ধাক্কা খেলেন মুকুল রায়। এই প্রথম বিজেপিতে বড় রকমের চাপে পড়ল মুকুল-লাইন।