সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে সারা দেশজুড়ে যে গেরুয়া ঝড় উঠেছিল সেখানে রাজ্যের শাসক দলকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে নি। অনেক রাজ্যে যেখানে বিজেপির বিরোধীরা প্রায় শূণ্য হাতে ফিরেছে সেখানে বাংলায় বেশভালো ফল করেছে রাজ্যের শাসকদল। তবে এই নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে কাটাছেঁড়া করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সোমবার নবান্নে সভাগৃহে বিকেল ৩টেয় এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।
সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে সারা দেশজুড়ে যে গেরুয়া ঝড় উঠেছিল সেখানে রাজ্যের শাসক দলকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে নি। অনেক রাজ্যে যেখানে বিজেপির বিরোধীরা প্রায় শূণ্য হাতে ফিরেছে সেখানে বাংলায় বেশভালো ফল করেছে রাজ্যের শাসকদল। তবে এই নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে কাটাছেঁড়া করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সোমবার নবান্নে সভাগৃহে বিকেল ৩টেয় এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।
শুধু বিধায়করা নয়। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবে রাজ্যের বিজিত সাংসদরা। রাজ্যের মন্ত্রীরাও সোমবার নবান্নে উপস্থিত থাকবেন। শনিবারই কালীঘাটে নিজের বাড়িতে দলের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘দলের বিপর্যয় সাময়িক। মাটি কামড়ে সকলকে পড়ে থাকতে হবে। ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।’ এবার লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা গেছে, ১০০–র কিছু বেশি দলের বিধায়ক নিজের কেন্দ্রে পিছিয়ে আছেন। বিধায়কদের মনোবল বাড়াতে মুখ্যমন্ত্রী এই বৈঠক ডেকেছেন।
দলের বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘দলকে আরও শক্তিশালী করতে হবে, জনসংযোগ বাড়াতে হবে, বিজেপি–র সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভয় না পেয়ে সঙ্ঘবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরাতে হবে।’ বিজেপি–র গুন্ডাবাহিনী যারা দাঙ্গা করেছে তাদের নামের তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। নির্বাচনে বিধায়করা কেন নিজেদের কেন্দ্রে পিছিয়ে থাকলেন তা নিয়ে নবান্নের বৈঠকে চুলচেরা বিশ্লেষণ হবে।
এছাড়াও ঠিক হয়েছে প্রতি সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী নিজে জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। ৭ জুন তৃণমূল ভবনে হুগলি জেলার সঙ্গে তিনি প্রথম বসবেন। তৃণমূল ভবনে এখন থেকে প্রতিদিন পালা করে বিধায়ক ও মন্ত্রীরা বসবেন। জেলার পার্টি অফিসগুলো সচল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবারই পার্ক সার্কাস ময়দানে প্রতি বছরের মতো কলকাতা পুরসভা ইফতার পাটি দিয়েছে। এখানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, মেয়র ফিরহাদ হাকিম–সহ অন্য নেতারা। ৭ জুন নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
লোকসভা নির্বাচনের পর তৃণমূলের একের পর এক দলীয় কার্যালয়, ক্লাব দখলের অভিযোগ ওঠে বিজেপি–র বিরুদ্ধে। ঘরছাড়া হন বহু তৃণমূল কর্মী। তাঁদের ঘরে ফেরাতে এবং নৈহাটি, ভাটপাড়া, কাঁচরাপাড়া এলাকার বিভিন্ন দলীয় কার্যালয় উদ্ধার করতে নির্দেশ দেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ১৪ জুন কাঁচরাপাড়ায় নিজেই সভা করবেন।
এর আগেও তিনি রাজ্যের প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও কিছু উল্লেখযোগ্য রদবদল করেন। মজবুত সাংগঠনিক ক্ষমতার মানুষদের কাঁধে তিনি দায়িত্ব তুলে দিয়েছেন। রদবদল করেছেন দলের সাংগঠনিক পদ গুলোকেও। যেটুকু খামতি বা ফাঁক ছিল এইবার যার সাহায্য নিয়ে বিজেপি মাথাচারা দিয়েছে তা পুরোপুরি একাই রুখে দাঁড়াচ্ছেন রাজ্যের জননেত্রী। যে দলটাকে তিনি নিজের হাতে তৈরি করেছেন সেই দলের ত্রাতা হয়ে সব নেতা-কর্মীদের মনে বল জোগাতে তিনি সচেষ্ট।