জমে উঠল বিশ্বকাপের লড়াই৷ প্রথম ম্যাচ থেকেই সৃষ্টি হল টানটান উত্তেজনা৷ প্রথম ম্যাচেই তিনশো পার করল ইংল্যান্ড। এ বার বিশ্বকাপে যে প্রচুর রান হবে, তার প্রমাণ প্রথম ম্যাচেই পাওয়া গেল। হাসিম আমলারা শেষ হয়ে গেল ২০৭ রানে। ১০৪ রানে জিতে গেল ইংল্যান্ড। স্টোকসরা বুঝিয়ে দিল কেন ওরাই ফেভারিট৷
ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ওঠার পরে উচ্ছ্বসিত ইংল্যান্ড শিবির। দলের অধিনায়ক অইন মর্গ্যান খেলা শেষে বলেই দিলেন, ‘‘দিনটা আজ আমাদের ছিল। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই দুরন্ত পারফরম্যান্স দেখিয়েছে ছেলেরা। আশা করছি, গোটা বিশ্বকাপে এ ভাবেই খেলে যাবে দল।’’
ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে করা ৩১১ রান তাড়া করতে নেমে ৩৪.১ ওভারে আদিল রশিদের বলে দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দাইল ফেহলুকওয়েও-এ ক্যাচ মিড উইকেটে লাফিয়ে ২.২ মিটার (প্রায় ৭ ফুট তিন ইঞ্চি) উপর থেকে ডান হাতে ছোঁ মেরে তুলে নেন বেন স্টোকস। খেলার পরে স্টোকসের সেই দুরন্ত ক্যাচ নিয়েই শুরু হয়েছে প্রশংসার বন্যা। বলা হচ্ছে, বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা ক্যাচ। ইংল্যান্ডের বড় ব্যবধানে জয়ের দিনে প্রধান আকর্ষণ স্টোকসের এই ক্যাচ। যা সর্বকালের সেরা ক্যাচ কি না, তর্কও উঠে গেল।
বোলারেদের এই সাফল্যটা এসেছে অসাধারণ হোমওয়ার্কের ফলে। দক্ষিণ আফ্রিকার কোন কোন ব্যাটসম্যানের কোথায়-কোথায় দুর্বলতা, সেগুলো দারুণ ভাবে আগে থাকতে ছকে নিয়েছিল জোফ্রা আর্চাররা। শুধু মার্কর্যামকে আউট করা নিয়েই যদি বলি, তা হলে দেখবেন, আর্চার উইকেট টু উইকেট বল করে গেল। কিন্তু একটা বল আচমকা অফ স্টাম্পের বাইরে দিল। সেটাও গতি বাড়িয়ে। আর সেখানেই ব্যাট বাড়িয়ে দিয়ে ভুল করে ফেলল। আর্চার দেখে নিয়েছিল, মার্কর্যামের পা সে ভাবে নড়ছিল না। এটাই হচ্ছে পর্যবেক্ষণ।
চার নম্বর ওভারে এই আর্চারের বলে চোট পেয়েই ড্রেসিংরুমে ফিরে গিয়েছিল হাসিম আমলা। ঘণ্টায় প্রায় ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে একটা বাউন্সার মেরে দিয়েছিল। আমলা পুল করতে গিয়ে মিস করে। বল হেলমেটে লাগে। ফিজিও কোনও ঝুঁকি নেয়নি। পরে অবশ্য আমলা মাঠে নেমেছিল। লাভ হয়নি। তখন যা হবার হয়ে গিয়েছে। মাত্র ১৩ রান করে ফিরে গেল। এটাও কিন্তু হোমওয়ার্কেরই ফসল। বাউন্সার সামলাতে আমলার একটু অসুবিধে হয়। সেটা আর্চার জানে বলেই এই পরীক্ষাটা করেছে। শুরুতে কুইন্টন ডি কক (৬৮) আর ভ্যান ডার ডাসেন (৫০) কিছুটা রান না করলে আরও বড় লজ্জায় পড়ত প্রোটিয়ারা।
ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের কথায় আসি। জনি বেয়ারস্টো (০), জস বাটলার (১৮) রান পায়নি। তারপরেও ইংল্যান্ড তিনশো পার করে ফেলল! তার মানে বুঝুন, ওদের ব্যাটিং শক্তি। ব্যাটিং গভীরতা। অনেকটা ভারতের মতোই। রোহিত-বিরাট রান না পেলেও আমরা যে তিনশো টপকাতে পারি, সেটা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ওয়ার্ম আপ ম্যাচেই দেখিয়ে দিয়েছি। এ দিন সেঞ্চুরি না এলেও ইংল্যান্ডের চারজন ব্যাটসম্যান ৫০ পার করে ফেলেছে। ফলে রান আটকে থাকেনি। ওপেনার জেসন রয় (৫৪) ভালো ব্যাট করেছে। রান পেয়েছে রুটও (৫১)।
ম্যাচ হেরে হতাশ দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি। বলছেন, ‘‘ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং—তিন বিভাগেই নজর কাড়তে ব্যর্থ হয়েছি আমরা। শুরুতে ইমরান তাহিরকে বল করতে আনার পরিকল্পনা খেটেও গিয়েছিল। কিন্তু ইংল্যান্ডের ব্যাটিং আজ দারুণ হয়েছে”৷