লোকসভা নির্বাচন শুরু হতেই আসরে নেমেছিল বাংলার বিজেপি শিবির। আর তখন থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে নেতা-কর্মীদের নিজের দলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। নির্বাচন শেষ হলেও সেই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু প্রদীপের তলায় যেমন অন্ধকার থাকে, এ ক্ষেত্রেও দল বড় হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিচু তলায় সংশয় তৈরি হয়েছে। হবে না-ই বা কেন, যাঁদের বিরুদ্ধে তারা এতদিন লড়ে এলেন, যাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলে এলেন, যাঁদের সঙ্গে লড়তে রক্তও ঝরল প্রচুর। তারাই যে এখন বিজেপির ‘বড় কারিয়াকর্তা’।
যত সময় যাচ্ছে, বিজেপির অন্দরেই দলের নতুন সদস্যদের ঘিরে তীব্র অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে। মুকুল রায় ও অনুপম হাজরার যুগলবন্দির নেওয়া কোনো সিদ্ধান্তই মেনে নিতে পারছেন না বিজেপির সক্রিয় নেতারাই। অন্যান্য দলের ‘বেনোজল’ দলে ঢুকছে বলে আগে থেকে আওয়াজ উঠছিল।
প্রসঙ্গত, বুধবার দিল্লীতে গেরুয়া ব্রিগেডের সদস্যপদ নেন মনিরুল ইসলাম। মনিরুলের যোগদানের পরই তীব্র ক্ষোভ ছড়ায় রাজ্য বিজেপির অন্দরে। জেলা থেকে নেতাদের কাছে ঘনঘন আসতে থাকে ফোন। সূত্রের খবর, সকলেই জানতে চাইতেন, সত্যিই কি অন্য দল ভাঙানো দরকারি? শুধু তাই নয়। কর্মী-সমর্থকরা ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। আর তারপর থেকেই বিজেপির অন্দরে তৈরি হয়েছে এই ক্ষোভের আগুন। প্রথমে হাওড়ার বিজেপি নেতা রন্তিদেব সেনগুপ্ত, যিনি এবার দলের টিকিটে প্রার্থীও হয়েছিলেন। রন্তিদেবের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। তারপরই তাঁর পথে হাঁটলেন বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র স্ত্রী সুজাতাও নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন ফেসবুকে। সুজাতা লেখেন যে অন্যান্য দলের আবর্জনাগুলোকে দয়া করে বিজেপিতে নেওয়া বন্ধ করুন। দলকে খুব ভালোবাসি তাই দলটার সন্মান কমে যাক চাইছি না।
ফলে একটা বিষয় পরিস্কার, বিভিন্ন নেতাদের দলে সামিল করার হিড়িক দেখে যে ক্ষোভ চাপা অবস্থায় ছিল। মণিরুল বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সেই ক্ষোভেরই বিস্ফোরণ ঘটছে। আর এই নেতাকে নিয়ে বিজেপিতে যদি চটজলদি কোনও সিদ্ধান্তে না আসতে পারে, তবে আখেরে প্রচুর ক্ষতি অপেক্ষা করে রয়েছে বিজেপির জন্য।