গোটা বালুরঘাট জুড়ে প্রচারে ঝড় তুলছেন তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ। একসময়ে বামেদের দুর্গ বলে পরিচিত এই জায়গাতে উন্নয়ন বলতে কিচ্ছু নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরে হাল ফিরেছে এই জায়গার। তৎকালীন সরকার এবং রেলের যাবতীয় বঞ্চনাকেই প্রচারে সামনে আনছে তৃণমূল।
তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষ প্রশ্ন তুলছেন বালুরঘাটের রেল প্রকল্পে কেন্দ্রের ব্যর্থতা নিয়ে। রেল নিয়ে বার বার বঞ্চনা করেছে মোদী সরকার। বিদায়ী সাংসদ অর্পিতা বলছেন, ‘এখানকার রেল সম্প্রসারণ, রেক পয়েন্ট, সিগন্যাল ব্যবস্থার উন্নীতকরণের কাজ ইচ্ছাকৃত ভাবে ঝুলিয়ে রেখেছে কেন্দ্র। ওয়াগন কারখানা তৈরির প্রকল্পও বন্ধ করে দিল ওরা। বালুরঘাট থেকে ট্রেনের সংখ্যাও বাড়ল না। বিজেপি ভোট চায় কোন্ মুখে?’
জেলার রাজনৈতিক মানচিত্রে ৭ বিধানসভার মধ্যে তৃণমূলের দখলে রয়েছে তপন, গঙ্গারামপুর, ইটাহার ও কুমারগঞ্জ। আবার জেলা পরিষদে সব আসনই তৃণমূলের। ৬৫টি গ্রাম–পঞ্চায়েতেও তা–ই। বালুরঘাট পুরসভা মমতার দখলে। ভোটের অঙ্কে এই পরিসংখ্যান তৃণমূলকে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে নিঃসন্দেহে।
ভোট–ময়দানে গঙ্গারামপুর ও আশপাশের তাঁত শিল্পও বেশ বড় ‘ফ্যাক্টর’। এক কালে রমরমিয়ে চলত। পরে মুখ থুবড়ে পড়ে বাম আমলে। তৃণমূল ক্ষমতায় এসে আবার চাঙ্গা করার চেষ্টা করে। মমতার উদ্যোগে ৯ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তাঁত–হাবের উদ্বোধন হয়।
এখানকার তাঁতশিল্পী রামগোপাল দাস তাই বলেন, ‘অনেক কিছুই হয়েছে, যা আগে ভাবতেও পারতাম না। উন্নয়ন না–হলে ভোটই বা দেবে কেন মানুষ?’ গঙ্গারামপুরই দুর্ভেদ্য এলাকা এখন তৃণমূলের। জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিপ্লব মিত্রেরও খাসতালুক। অর্পিতার হয়ে জোর প্রচার চালাচ্ছেন বিপ্লববাবুরা। রাজ্যের মন্ত্রী, তপনের বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা–সহ জেলা নেতৃত্ব ঝাঁপিয়ে পড়েছেন বিজেপি–কে ঠেকাতে।
এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, “ ‘এটা তো বামেদের দুর্গ ছিল এক সময়। এখন ঘাসফুল ফুটেছে। মানু্ষ উন্নয়ন চায়। এবার বুঝে নিন।’ দু’বছর আগে এখানে ভয়াবহ বন্যা হয়। তাঁত শিল্পের তালুক এই গঞ্জ শহর ও আশপাশে এখন বন্যার তিলমাত্র ছাপ নেই। দ্রুত পুনর্নির্মাণ, সরকারি উদ্যোগে রাস্তা, পানীয় জলের ব্যবস্থা, কিসান মান্ডি, স্কুল–কলেজ, বড় হাসপাতাল নিয়ে আরও বেশি জমজমাট। বিশ্ববিদ্যালয় হবে খুব শিগ্গিরই”।