গতকাল, বুধবারই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার গুরুংপন্থী অংশের মুখপাত্র বিপি বাজগেইন একটি ভিডিও বার্তা ছড়িয়ে বিমল গুরুংয়ের দার্জিলিংয়ে প্রত্যাবর্তনের খবর দিয়েছেন। এরপরই ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেব স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘বিমল গুরুং দার্জিলিংয়ে ফিরলে লোকসভা নির্বাচনে কতটা প্রভাব পড়বে জানি না, তবে প্রশ্ন উঠছে দেশের অখন্ডতা নিয়ে, শান্তিশৃঙ্খলা, ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে।’
প্রসঙ্গত, বিপি বাজগেইন তাঁর ওই ভিডিওয় জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ বিমল গুরুং, রোশন গিরিরা শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছবেন। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, আগামী ৪ দিন বিমল গুরুংকে গ্রেফতার করা যাবে না। এই ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পরই শোরগোল রাজনৈতিক মহলে। তবে কি পাহাড়ে ফিরতে চলেছেন বিমল গুরুং? লোকসভা নির্বাচনে কতটা প্রভাব পড়বে তার? এমনই সব প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘নির্বাচন আসবে-যাবে। প্রশ্নটা লাভ-ক্ষতির নয়। প্রশ্ন দেশের অখন্ডতা নিয়ে, ধর্ম নিরপেক্ষতা নিয়ে, শান্তিশৃঙ্খলা নিয়ে।’ বিজেপিকে এক হাত নিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেছে, জীবন ধ্বংস করেছে, তাদের মদদদাতা বিজেপি। সেটা দেশের পক্ষে কতটা ভালো বা কতটা নিরপেক্ষ, সেটাই প্রশ্ন।’
প্রসঙ্গত, ভোট প্রক্রিয়ায় সামিল হতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিলেন গুরুংপন্থীরা। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি অরুণ মিশ্র ও বিচারপতি নবীন সিংহর বেঞ্চ গুরুংদের আবেদন খারিজ করে দিয়ে মামলাটি ফিরিয়ে দেন কলকাতা হাইকোর্টে। যথাযথ শুনানি করে মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টকে নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের তরফে। পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, হাইকোর্টে মামলাটির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিমল গুরুং বা রোশন গিরিদের বিরুদ্ধে কোনওরকম ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েকমাস ধরেই ফেরার এসআই অমিতাভ মালিককে খুনে অভিযুক্ত বিমল গুরুং। পাহাড়ে তাঁকে তন্নতন্ন করে খুঁজছে পুলিশ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত গুরুংয়ের টিকির দেখাও মেলেনি। বহুবারই এই অভিযোগ উঠেছে, গুরুংকে আশ্রয়দান করেছে বিজেপি। সেই অভিযোগ যে কতটা সত্যি, তা স্পষ্ট হয়ে গেছিল গতমাসেই। কারণ বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তাকে সমর্থন করা নিয়ে মোর্চা ও জিএনএলএফের যে গোপন বৈঠক বসেছিল, তাতে সশরীরে হাজির ছিলেন গুরুং।