প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘ওপেন মিটিং’-এর চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বুধবার দিনহাটার সভা থেকে মমতা বলেন, ‘ক্ষমতা থাকলে আমার সঙ্গে তর্কে আসুন। একসঙ্গে ওপেন মিটিং করুন। মিটিংয়ে আপনি থাকবেন, আমি থাকব। আপনি প্রশ্ন করবেন, আমি উত্তর দেব’। এদিন মোদীকে ‘এক্সপায়ারি বাবু’ বলেও কটাক্ষ করেন মমতা।
বুধবার বিকালে তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারীর সমর্থনে প্রচার সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে এদিন সকালে ও দুপুরে শিলিগুড়ি ও কলকাতায় দুটি সভা করে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে বক্তব্য পেশ করেন মোদী। দিনহাটার মঞ্চ থেকে সেই সব বক্তব্যেরই খণ্ডন করেন মমতা। বিভিন্ন ইস্যুতে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক তোপ দাগেন তিনি।
মোদীকে তোপ দেগে দিনহাটার সভামঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘মানুষকে বোকা বানিয়ে এর আগে ভোট নিয়ে গিয়েছেন৷ পাঁচ বছর পরে আবার বোকা বানাতে চাইছেন মোদী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি এক্সপায়ারি করে গেছেন। এবার থেকে আর তাঁকে প্রধানমন্ত্রী বলব না। বলব, এক্সপায়ারি বাবু’। মমতার কথায়, ‘এক্সপায়ারিবাবু মিথ্যা বলছেন। মিথ্যা কথা বলে মানুষকে ভাঁওতা দিচ্ছেন। ৫৬ ইঞ্চি ছাতি নিয়ে ৫৬০টি মিথ্যা কথা বলছেন’। ব্রিগেডে মোদীর সভাকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, ‘জনগণের টাকায় জনগণকে বোকা বানিয়েছে বিজেপি৷ তারা জনগণের টাকায় আত্মসাৎ করেছে৷ টাকার হাঙররা হ্যাঙ্গারের মিটিং করছে’।
দিনহাটার সভা থেকে মমতা প্রশ্ন তোলেন, ‘ইলেকশন কমিশন বলেছে সেনাদের কথা বলা যাবে না, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কী করে বলেন?’ মমতা বলেন, ‘মোদীবাবুর আমলে কত লোকের চাকরি চলে গিয়েছে৷ আর বাংলায় আমরা চাকরি দিয়েছি৷ শুধুমাত্র মানুষকে বোকা বানানোর কথা বলছে বিজেপি৷ পাঁচ বছর চলে গিয়েছে, আবার মিথ্যে কথা৷ আজকের এই কথা দাম নেই৷ কিন্তু আমরা রাজবংশী অ্যাকাডেমি করে দিয়েছি৷ আমরা বিভিন্ন ভাষাকে সম্মান দিয়েছি, এটাই তৃণমূলের সরকার৷ আমরা মুখে বলি না , করে দেখাই’। মমতা সাফ বলেন, ‘বাংলার সঙ্গে পাঙ্গা নিয়ে কোনও লাভ নেই৷ আগে দিল্লী সামলা, তারপর দেখিস বাংলা৷ বাংলার গর্ব আমার মা, বোনেরা৷ বিজেপির আয়ুষ্মান ফালতু প্রোগ্র্যাম৷ তাতে আমাদের টাকাই যাচ্ছিল৷ এই আয়ুষ্মান চাই না. রাজ্য তা চায় না’।
জনতাকে সাবধান করে দিয়ে মমতা বলেন, ‘এই দল যদি পের ক্ষমতায় আসে তাহলে আপনার, আমার, তফশিলী, আদিবাসী, শিখ, খ্রীস্টান কারও অধিকার থাকবে না৷ দেশে আর নির্বাচন হবে না৷ আর গণতন্ত্র থাকবে না৷ দেশটাকে দখল করে নেবে ভয় দেখিয়ে৷ যা আজকে করছে৷ কিন্তু আমাকে চমকে কিছু হবে না৷ যতক্ষণ বেঁচে থাকবে বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে৷ টাচ মি ইফ ইউ ক্যান৷ আমাদের স্পর্শ করতে পারবেনা’৷ রাজ্যে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে মমতা বলেন, ‘কন্যাশ্রী, সবুজসাথী, ২টাকা কিলো দরে চাল, কৃষক বন্ধু, স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা পেয়েছেন রাজ্যের মানুষ। শস্যবিমার পুরো টাকাটাই রাজ্য সরকার দেয়। কৃষিঋণে খাজনা মকুব করা হয়েছে’।
