গত লোকসভা নির্বাচনে যে সম্পাদক-সঞ্চালককে ঘণ্টা দেড়েকের সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন, তিনি এখন অন্য চ্যানেলে হলেও আজও তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভরসার সাংবাদিক। ভোটের মুখে এবারও তাঁর কাছে ‘মন কি বাত’ বললেন মোদী। একইসঙ্গে পুলওয়ামার ঘটনার প্রায় দেড় মাস পর সে বিষয়ে মুখ খুললেন তিনি।
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস, তৃণমূল-সহ দেশের সকল বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, পুলওয়ামায় হামলার পরও নৈনিতালের জিম করবেট উদ্যানে বাঘ নিয়ে তথ্যচিত্রের শুটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এমনকি, এরপরও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জনসভায় বক্তৃতাও দিয়েছেন, কিন্তু নিহত জওয়ানদের কথা উল্লেখ করেননি। তবে গতকাল ওই বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমে এ নিয়ে মুখ খুললেও সে বিষয়ে চুপই ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এ কথা এড়িয়েই গেলেন যে, ঠিক কোন সময়ে তিনি পুলওয়ামার খবর পেয়েছিলেন।
তবে জনসভায় কেন ওই ঘটনা উল্লেখ করেননি, তার অবশ্য যুক্তি দিলেন তিনি। মোদীকে প্রশ্ন করা হয়, ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামার ঘটনার সময় আপনি কোথায় ছিলেন? কখন শুনলেন এই ঘটনার কথা? তিনি বলেন, ‘আমার সব কর্মসূচিই পূর্ব নির্ধারিত থাকে। সে দিন আমি উত্তরাখণ্ডে ছিলাম। পরিবেশ আর পর্যটনে আমি গুরুত্ব দিই। গোটা দিনের কর্মসূচি ছিল। যখন পুলওয়ামার ঘটনা হল, তখন খুব বৃষ্টি হচ্ছিল। আমার একটি বড় জনসভাও ছিল, বেলা তিনটের সময়ে। কিন্তু সেখানে পৌঁছনো মুশকিল ছিল। এরই মধ্যে খবর এল। সঠিক সময়টি…’ বলে থেমে যান মোদী।
এরপরই নিজেকে সামলে নিয়ে মোদী বলেন, ‘ঠিক করলাম, মোবাইল ফোনেই সভায় বক্তৃতা করব। কিন্তু এত বড় সভায় এই ঘটনা আলোচনা করা উচিত নয়।’ উল্লেখ্য, এর আগে সরকারের নানা ‘সূত্র’ মারফত আগে জানানো হচ্ছিল, প্রবল বৃষ্টি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। দেরিতে জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী নাকি বেজায় চটেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের উপর।
সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ২০১৩ সালে তাঁর বিহারের সভার নজির টেনে আনেন। যেখানে সভার মধ্যেই বিস্ফোরণ হয়। কিন্তু সেখানে তিনি ‘ভারসাম্য’ বজায় রেখে সকলকে শান্ত রাখেন। তা না হলে হুলস্থূল বেধে যেত। একইসঙ্গে নিজের পিঠ বাঁচাতে মোদীর মন্তব্য, ‘এ ধরনের পরিস্থিতিতে ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়। কেউ যদি এ নিয়ে রাজনীতি করেন, তা হলে তাঁরা অবোধ।’