নজির বিহীন ভাবে এবার সাত দফায় লোকসভা ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। আর তার জেরে ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসে গেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কিন্তু সেই বাহিনীর সংখ্যা এতই বেশি যে প্রশ্ন উঠছে সাধারণ মানুষকে ভয় দেখাতেই কি এত সংখ্যক বাহিনী এসেছে বাংলায়?
এই প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অন্দরেও। কাশ্মীরেও কি এত কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে? ভোটের এত আগে থেকে রাজ্যে বিপুল পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ দেখে রবিবার এই প্রশ্নই তুলে দিলেন শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তবে তাঁদের মূল অভিযোগ, রুট মার্চের সময় নিজেদের এক্তিয়ার ছাড়িয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকির সুরে কথা বলছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। স্থানীয় পুলিশকে দাঁড় করিয়ে রেখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাই পুলিশের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ তৃণমূলের। কেন্দ্রীয় বাহিনীর এহেন আচরণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে প্রতিবাদ জানাবে শাসকদল। দলের নেতা-কর্মীদেরও বিষয়টির উপর নজর রাখার আবেদন জানিয়েছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব।
তৃণমূলের অভিযোগ, অনেক জায়গাতেই বাহিনীর আচরণ আপত্তিজনক। পার্থ যেমন বলেন, ‘ওরা বাহুবলী হতে চাইছে। আমি জানি না, কাশ্মীরে ১২৩ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে কি না। তার থেকেও বেশি যুদ্ধ বোধ হয় এখানে। ভোটারের থেকে ফৌজ বেশি।’ তৃণমূল মহাসচিবের আরও বক্তব্য, ‘চাঁদ থেকেও কিছু লোক আনতে পারে দেখুন। কিন্তু যেটা আমাদের নজরে রাখতে হবে, আমি কালকে একটা ফৌজের বাক্য বিনিময় শুনছিলাম। ফৌজ আসবে কী জন্য? যাতে ভোট নির্বিঘ্নে হতে পারে এবং তারা কাদের উপর নির্ভর করবে? স্থানীয় প্রশাসনের উপর। স্থানীয় পুলিশকে দাঁড় করিয়ে রেখে ফৌজের একজন সদস্য একটা ভদ্রমহিলাকে গিয়ে বলছেন, এই যে শুনুন, ঠিকমতো যেন সব হয়। এরিয়া ডমিনেশন কিন্তু আপনার ছেলে করছে। ছেলে কোথায়? আপনার ছেলেকে বলবেন, এই সব চলবে না।’ এর পরেই পার্থ প্রশ্ন তোলেন, ‘এটা বলার অধিকার কী আছে? এই যে ভয় দেখা চেষ্টা হচ্ছে। এটা করার অধিকার কি তাঁর আছে? আমরা প্রতিবাদ করছি, এবং যতদূর যেতে হয় যাব।’
কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রসঙ্গ তুলেছিলেন ফিরহাদ হাকিমও। ফিরহাদ বলেন, ‘আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। সেন্ট্রাল ফোর্স নির্বাচন কমিশন এনেছে। ১৩৫ কোম্পানি। জঙ্গলমহলে যখন ঝামেলা চলছিল তথনও সেন্ট্রাল ফোর্স পাইনি। ১৩৫ কোম্পানি কাশ্মীরে আছে কি না, জানি না। কমিশন এনেছে তাই নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। এই সেন্ট্রাল ফোর্সের মধ্যেই আমরা ইলেকশন করেছি। ১৬-তে একটা বিরাট রেজাল্ট হয়েছে। বাই ইলেকশনগুলো করলাম। ৬০ শতাংশ মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু সেন্ট্রাল ফোর্সের মধ্যে যদি পক্ষপাতিত্ব থাকে? সেন্ট্রাল ফোর্স যদি বাড়িতে গিয়ে থ্রেট করে, সেটা ঠিক না। যদি কেউ অন্যায় করে, তাকে গিয়ে অ্যারেস্ট করাটা লোকাল পুলিশের কাজ।’