গত রবিবারই ভোট ঘোষণা ও নির্বাচনী নির্ঘন্ট প্রকাশ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেইসঙ্গে সেদিন থেকেই চালু হয়ে গেছে নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি। এই আদর্শ আচরণবিধি হল অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য একগুচ্ছ নিয়ম, যা রাজনৈতিক দলগুলির পারস্পরিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন তৈরি করেছে। এবার সেই নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। নির্বাচন ঘোষণার পরও মোদী সরকারের আয়ুষ্মান ভারত যোজনার চিঠি বিলি নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়াল হুগলীর বেলুন এলাকায়।
পান্ডুয়ার বেলুন পঞ্চায়েতের ভায়রা ও কুতুবমহল গ্রামে বেলুন ডাকঘরের দু’জন কর্মী আয়ুষ্মান ভারতের চিঠি বাড়ি বাড়ি বিলি করছিলেন বলে অভিযোগ। বাড়িতে চিঠি বিলি করার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। খবর পৌঁছোয় তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে। স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই চিঠি বিলি আটকে দেয়। সেইসঙ্গে অভিযোগ জানানো হয় নির্বাচনী আধিকারিকদের। ঘটনাস্থলে গিয়ে আয়ুষ্মান ভারতের চিঠি বাজেয়াপ্ত করে নিবার্চন কমিশনের আধিকারিকরা। কীভাবে নির্বাচন ঘোষণার পরও ডাকঘর থেকে নরেন্দ্র মোদীর ছবি দেওয়া স্বাস্থ্য বিমার কার্ড বিলি করা হচ্ছিল তা খতিয়ে দেখছেন আধিকারিকরা।
প্রসঙ্গত, ভোট ঘোষণার পর থেকে ভোট প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক দল, প্রার্থী ও পোলিং এজেন্টরা কী করবেন ও কী করবেন না, সেটাই বলা আছে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধিতে। সেই আচরণবিধিতে স্পষ্ট বলা আছে, মন্ত্রীরা সরকারি সফর ও নিজেদের সরকারি পদের সঙ্গে ভোটের প্রচারকে মেলাতে পারবেন না এবং সাহায্য বা ত্রাণ ও উন্নয়নমূলক কাজের প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন না। পাশাপাশি, ভোটারদের ওপর প্রভাব ফেলবে, এমন প্রতিশ্রুতি থেকেও বিরত থাকতে হবে।
ভোটের মুখে আয়ুষ্মান ভারত যোজনার চিঠি বিলি করে আসলে জনগণকে প্রভাবিত করতে চাইছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এই মুহূর্তে ওই চিঠি পাঠানোর মানে যে একপ্রকার বিজেপিরই প্রচার করা, তা বুঝতে কারোরই অসুবিধা হওয়ার কথা না। এ প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি তথা বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল জানিয়েছেন, জনসমর্থন নেই বলেই বিজেপি এখন সস্তার রাজনীতি শুরু করেছে। পাশাপাশি তিনি জানান, নির্বাচনী বিধিকে সম্মান জানিয়ে ইতিমধ্যেই জেলা জুড়ে হোর্ডিং পোস্টার সরানোর কাজ শুরু করা হয়েছে। আর সে কাজ করছেন খোদ তৃণমূল কর্মীরাই।