গতকাল, মঙ্গলবারই লোকসভা নির্বাচনের জন্য তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের ৪২ কেন্দ্রে ভোটযুদ্ধের জন্য যে ৪২ জন বিশ্বস্ত সৈনিকের নাম ঘোষণা করেছেন তিনি, তাঁর মধ্যে অন্যতম বড় নাম বাঁকুড়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বর্তমানে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী তিনি। দলের জেলা সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে শীঘ্রই বাঁকুড়ায় এসে প্রচারে নামবেন বলে জানান সুব্রতবাবু।
প্রসঙ্গত, গত নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করেছিলেন তারকা প্রার্থী মুনমুন সেন। ৯ বারের সাংসদ তথা সিপিএমের হেভিওয়েট প্রার্থী বাসুদেব আচারিয়াকে ৯৮ হাজার ৫০৬ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়লাভ করেন তিনি। এবার সেই মুনমুন সেনকে আসানসোল কেন্দ্রে প্রার্থী করেছেন মমতা। আর তাঁর জায়গায় বাঁকুড়ায় প্রার্থী হয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভের পর পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের পাশাপাশি তিনি দায়িত্ব পান জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরেরও। সেই সময়ই বাঁকুড়ার মানুষকে পরিশ্রুত পানীয় জল দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর উদ্যোগেই ১১০০ কোটি টাকার পানীয় জল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে গেছে ২০১৭ সালের মধ্যেই। পানীয় জল পৌঁছেছে জেলার ১৪টি ব্লকে। অন্যান্য ব্লকগুলির জন্য প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজও শুরুর মুখে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতীকে বাঁকুড়া কেন্দ্রে লড়াই করেছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। আর এবার প্রার্থী হয়েই বিজেপির উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, আগে এ ধরনের বিচিত্র পার্টির সঙ্গে লড়াই করেননি। আগে লড়াই ছিল একটা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে। এবার একটা অরাজনৈতিক দলের সঙ্গে লড়াই করতে হবে। তবে জেতার ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত এই প্রবীণ রাজনীতিক।
অন্যদিকে, এবার বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন শ্যামল সাঁতরা। এক সময় বাঁকুড়ার জয়পুর ব্লকের তৃণমূল শিক্ষা সেলের সভাপতি ছিলেন তিনি। ২০১৪ সালে প্রথমবার কোতুলপুর বিধানসভা থেকে উপনির্বাচনে জয়লাভ করে বিধায়ক হন। এরপর ২০১৬ সালেও ওই একই কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেন শ্যামল। বর্তমানে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী তিনি। তবে এবার তিনি লড়বেন লোকসভা নির্বাচনে।
গতকাল প্রার্থী হিসেবে দলনেত্রী তাঁর নাম ঘোষণা করতেই কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন শ্যামল সাঁতরা। মঙ্গলবার এলাকায় নিজের হাতে দেওয়াল লিখন করতেও দেখা যায় তাঁকে। তিনি বলেন, ‘রাজ্যে ৪২-এ ৪২ আমাদের লক্ষ্য। বিরোধী দলের কে প্রার্থী হল তা নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। আমরা উন্নয়ন নিয়ে সারা বছর মানুষের পাশে থাকি। আর মানুষও সেই উন্নয়নের সঙ্গেই রয়েছে।’
এই কেন্দ্রে গতবারের তুলনায় এবার আরও বেশি ভোটের ব্যবধানে দল জয়ী হবে বলেই আত্মবিশ্বাসী বিষ্ণুপুরের তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল। তাঁর কথায়, ‘একমাত্র তৃণমূলই এখানে বরাবরই মানুষের পাশে দাঁড়ায়। গতবারের নির্বাচনে এই কেন্দ্রে যে ব্যবধানে জিতেছিল দল, এবার সেই ব্যবধান আরও বাড়বে।’