আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। গোটা দেশ জুড়ে বিভিন্ন ভাবে পালিত হচ্ছে আজকের দিনটি। সত্যিই, নারীত্ব তো গর্বেরই বিষয়। তবে সব নারীর জীবন মসৃণ হয় না। অনেকেই বহু যুদ্ধ করে এসে জীবনে থিতু হন। অনেক মেয়েই ফাঁদে পড়ে পাচার হয়ে যান, তলিয়ে যান অন্ধকারে। এই নারীদিবসে পাচার হয়ে গিয়েও যাদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে তাঁদের পাশে থাকছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
২৪ বছরের ঝুমা (নাম অপরিবর্তিত), প্রায় ২ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে আগ্রায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। না স্বামী-স্ত্রীর ঘুরতে যাওয়ার চেনা গল্প বদলে গিয়েছিল এক নিমেষে, সেখানকার নিষিদ্ধ পল্লীতে ঝুমাকে বিক্রি করে দেওয়া হয়। বছর সতেরোর কিশোরী মাম্পি প্রেমের টানে পাড়ি দিয়েছিল দিল্লী। না, সংসার করা হয়নি তাঁর বরং স্থান হয়েছিল পতিতালয়ে। এরকম বহু মেয়েই হারিয়ে যান এভাবেই। ক্যানিংয়ের ‘বীরাঙ্গনা সেবা সমিতি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সমিতির সহায়তায় উদ্ধার করা হয় বেশ কয়েক জন কিশোরী-তরুণীকে। নতুন করে লড়াইয়ের স্বপ্ন দেখছেন তাঁরা। সরকারের তরফ থেকে তাঁদের আর্থিক সহায়তাও করা হয়েছে।
নারী দিবসের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার ওই কিশোরী-তরুণীকে ৪০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য করল রাজ্য সরকার। বছর সতেরোর ওই কিশোরী বা ২৪-এর তরুণী অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা হতে পারেন। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে আমিনা লস্করের সঙ্গে এ দিন তাঁরা দেখা করেন রাজ্যের সংখ্যালঘু বিষয়ক দপ্তরের সচিব পিবি সেলিমের সঙ্গে। আর্থিক অনুদান সংক্রান্ত নথিপত্র তুলে দেওয়া হয় তাঁদের হাতে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই কিশোরী ও তরুণীকে মুদি দোকান চালানো ও মণিহারি সামগ্রী বিক্রির জন্য আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে।
আজ নারী দিবসে দুপুর ১২টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের মহিলা নেত্রী, কর্মী, সমর্থকদের নিয়ে শ্রদ্ধানন্দ পার্ক থেকে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত হাঁটবেন। সেখান থেকে নারী স্বাধীনতা নিয়ে বার্তাও দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপির মহিলা মোর্চাও একই সময়ে রাজ্য সদর দপ্তর থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল করবে। নারী দিবস উপলক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা পুলিশও। লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতা পুলিশের গাড়ি তো বটেই, বিভিন্ন অ্যাপ ক্যাব ও বাণিজ্যিক যানে ‘রেসপেক্ট উইমেন’ স্টিকার লাগানোয় উদ্যোগী হয়েছে পুলিশ। কলকাতা পুলিশের লোগোর সঙ্গে এই স্টিকারে থাকবে মহিলাদের সম্মান জানানোর বার্তা।