গত বৃহস্পতিবার বাড়িতে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁকে কল্যাণীতে জেএনএম হাসপাতালে ভরতি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় এসএসকেএমে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। সোমবার হাসপাতালে অসুস্থ বড়মাকে দেখে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই মঙ্গলবার রাতে সব শেষ৷ ভক্তদের একা করে অমৃতলোকের পথে পাড়ি দিয়েছেন বীণাপাণি দেবী।
শোকার্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাতেই জানান সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বড়মার৷ আজ সকালে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে তাঁর মরদেহ যশোর রোড দিয়ে ঠাকুরনগরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানেই পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বড়মার৷ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ছ’জন মন্ত্রী সম্পূর্ণ বিষয়টি দেখভাল করছেন। বিভিন্ন প্রান্তের মতুয়া ভক্তরা শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য ইতিমধ্যেই ঠাকুরনগরে মতুয়াদের প্রধান কার্যালয়ে ভিড় জমিয়েছেন৷
বড়মার মৃত্যুর খবর পেয়ে এসএসকেএমে ভিড় জমান তাঁর অগণিত ভক্ত৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বুধবার সকালে এসএসকেএম থেকে বড়মাকে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়৷ হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন ফিরহাদ হাকিম এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক-সহ অনেকেই৷ ফিরহাদ হাকিম বলেন,‘‘বড়মার মৃত্যুতে দ্বিতীয়বার মা হারানোর যন্ত্রণা পেলাম৷’’ বড়মার সঙ্গে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, “এটা আমাদের কাছে এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি সবার কাছে মায়ের মতো ছিলেন।” যশোর রোড হয়ে দেহ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ঠাকুরনগরে৷ পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রমথরঞ্জন ঠাকুরের পাশেই সমাধিস্থ করা হবে বড়মাকে৷
১৯১৯ সালে বরিশালের জব্দকাঠি গ্রামে বীণাপাণিদেবীর জন্ম। অল্প বয়সেই বিয়ে ফরিদপুরের প্রমথরঞ্জন ঠাকুরের সঙ্গে। দেশভাগের পর স্বামীর সঙ্গে অশোকনগরের ঠাকুরনগরে চলে আসেন তিনি। তার আগেই অবশ্য ওপার বাংলায় পথ চলা শুরু করেছিল মতুয়া সম্প্রদায়। প্রমথরঞ্জনের দাদু হরিচাঁদ প্রবর্তন করেছিলেন বৈষ্ণব ধর্মের এই নতুন শাখার। যা এগিয়ে নিয়ে যান প্রাক্তন সাংসদ প্রমথরঞ্জন ও তাঁর স্ত্রী বীণাপাণি। দিন দিন বাড়তে থাকে ভক্তের সংখ্যা৷ জীবনভর মতুয়াদের হয়েই কাজ করে গিয়েছেন বড়মা৷