আধা সামরিক বাহিনীর গাড়িতে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গী গোষ্ঠীর আত্মঘাতী বিস্ফোরণের পর, ঠিক ১২ দিনের মাথায় এবার পাল্টা দিল ভারত। আর চুপ করে বসে না থেকে পুলওয়ামার জবাব হিসেবে নিয়ন্ত্রণ রেখার ওপারে পাকিস্তানের ভূখন্ডে থাকা একের পর এক জঙ্গী ঘাঁটি উড়িয়ে দিয়েছে ভারতীয় বায়ু সেনা। সেনা সূত্রে খবর, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ এই স্ট্রাইক শুরু করে। বায়ুসেনার ১২টি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান কার্পেট বম্বিং শুরু করে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, যে উদ্দেশ্য নিয়ে স্ট্রাইক করেছিল ভারত তাতে পুরোপুরি সফল।
ভারতীয় বায়ুসেনার এই প্রত্যাঘাতে নিকেশ হয়েছে ৩০০ জঙ্গী। প্রাক্তন সেনাপ্রধান শঙ্কর রায়চৌধুরী ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ভারতীয় বায়ুসেনার। তাঁর কথায়, ‘‘ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও বলা সম্ভব নয়। কিন্তু যে ভাবে জইশের সব থেকে বড় ঘাঁটিতে ঢুকে আক্রমণ চালালো ভারতীয় বায়ুসেনা, তা আসলে বায়ুসেনার নিখুঁত পরিকল্পনাকেই সামনে আনছে।’’
আরও এক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ পি কে সায়গলেরও মন্তব্য, ‘‘আক্রমণ করলে প্রত্যাঘাত আসবে, এই বার্তাই পৌঁছে দেওয়া গেল পাকিস্তানকে। দু’দিন আগেই এলাকা পরিদর্শন করে পাক সেনাপ্রধান জানিয়েছিলেন, ভারতের আক্রমণ সামাল দিতে তাঁদের প্রস্তুতি শেষ। সেই কথা যে কতটা ফাঁকা ছিল, তাই প্রমাণ করে দিল ভারতীয় বায়ুসেনা।’’
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ অনিল গৌড় সংবাদসংস্থা কে জানিয়েছেন, এই বিমানহামলার জন্য যে প্রস্তুতি বায়ুসেনা নিয়েছে, সেটাই তাঁকে চমকে দিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এই ধরনের বিমান হামলায় সবার আগে প্রয়োজন হয় নিখুঁত খবরের। এই জায়গাতেই অনেক এগিয়ে গিয়েছে ভারত। কারণ, বিমান হামলার সময় যুদ্ধবিমানকে প্রথম শত্রুঘাঁটির আকাশে একেবারে গাছের উচ্চতায় নামিয়ে নিয়ে যেতে হয়। তার পর যুদ্ধবিমান খাড়া ৯০ ডিগ্রি ওপরে ওঠে। ওপর থেকে বোমাবর্ষণ করে পাইলট আবার যুদ্ধবিমানটি নীচের উচ্চতায় নামিয়ে এনে অন্য এলাকার দিকে ছুটে যায়।’’
অনিল গৌড়ের কথায় এই ধরনের আক্রমণ বিপজ্জনক, কারণ প্রতিপক্ষ বিন্দুমাত্র খবর পেলে যুদ্ধবিমান ধ্বংস করে দিতে পারে। কারণ, যুদ্ধবিমান শত্রুঘাঁটির একদম কাছে পৌঁছে যায় । আশঙ্কা থাকে শত্রু রাডারে ধরা পড়ে যাওয়ার। তাই পাইলট এবং যুদ্ধবিমান, সবার জন্যই এই ধরনের আক্রমণ অত্যন্ত বিপজ্জনক”। তবে ভারতীয় বায়ুসেনা নির্ভীক এবং দৃঢ় ভাবে যেভাবে আজকের অপারেশন সফল করল, তা সত্যিই প্রশংসাযোগ্য।