নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও একজন নেতা নয়, আসন্ন লোকসভা ভোটে মোদীর বিরুদ্ধে মুখ জনতাই। গতকাল রাজধানীর বুকে দাঁড়িয়ে এ কথা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে মোদী-শাহ জুটিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তিনি বলেন, ক্ষমতা থাকলে বাংলায় একটি আসনেও জিতে দেখাক বিজেপি।
মমতার কথায়, এখন যে দু’টি আসন আছে, তাও এবার পাবে না বিজেপি। বাংলায় এবার ওরা বিগ জিরো। এর পাশাপাশি, জাতীয়স্তরে মোদী বিরোধী লড়াইয়ের স্ট্র্যাটেজি তৈরিতে গতি বাড়াতে চলতি মাসের শেষে তিনি যে ফের দিল্লী আসবেন, সে কথাও জানিয়ে দিলেন তৃণমূলনেত্রী। গতকাল দিল্লীর প্রেস ক্লাবে এক প্রশ্নের উত্তরে মমতা বলেন, মোদীর বিরুদ্ধে আমাদের প্রধানমন্ত্রী মুখ কে, এসব নিয়ে আমরা মোটেই চিন্তিত নই। আমাদের একমাত্র টার্গেট মোদী বিদায়। সেই লড়াইয়ে মোদীর বিরুদ্ধে মুখ আম জনতা। তারাই এবার মোদীকে হঠাবে।
সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন যে, মোদী হঠাতে জাতীয়স্তরে মহাজোটের সিদ্ধান্ত হলেও রাজ্যে রাজ্যে যে যেখানে শক্তিশালী সেখানে সেই রাজনৈতিক দলকেই অন্যদের সহযোগিতা করা উচিত। বাংলায় তৃণমূলই শক্তিশালী। কিন্তু সেখানে কংগ্রেস, সিপিএম আমার বিরুদ্ধে। তবে রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায় যে যাই করুক, জাতীয় স্তরে মোদীর বিরুদ্ধেই আমরা লড়ছি। এরপরই সারা দেশের সাংবাদিকদের সামনে কার্যত সিলমোহর দেওয়ার ঢঙে মমতা বলেন, লিখে নিন। কোনওভাবেই আর ক্ষমতায় ফিরতে পারবেন না নরেন্দ্র মোদী। ওঁর এক্সপায়ারি ডেট ওভার হয়ে গেছে। তারিখ ফুরিয়ে যাওয়ার পর কেউ কি কোনও ওষুখ খায়? মোদী-শাহর ক্ষেত্রেও তাই।
এরপরই গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশ্যে মমতার চ্যালেঞ্জ, ক্ষমতা থাকলে বাংলায় একটি আসনেও জিতে দেখাক বিজেপি। মোদী-শাহরা নিজেরাও বাংলার প্রার্থী হলে জিততে পারবেন না। একইসঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, মোদী-শাহর মিথ্যে ধরা পড়ে গেছে। চার পাঁচজন বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, খোদ প্রধানমন্ত্রী-সহ কেন্দ্রের এক ডজন মন্ত্রী বাংলায় গিয়ে সভা করে এসেছেন। অমিত শাহ সোয়াইন ফ্লু গায়ে সভা করেছেন। আর মিডিয়ায় বলছে, আমরা সভা করতে দিচ্ছি না। বাধা দিচ্ছি। বিজেপির আমাকে এত ভয় কীসের?
বুধবারই লোকসভায় পাশ হয়েছে চিটফান্ড বিল। অন্যদিকে বাংলায় হঠাতই জোরদার হয়েছে চিটফান্ড তদন্তের গতি। এমনকি বেনজিরভাবে কলকাতার পুলিশ কমিশনারের বাড়িতেও সিবিআই হানা দিতে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৮০ সাল থেকে বাংলায় চিটফান্ড চলছে। কেউ এতদিন কিছু করেনি। আমরা ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসে আইন এনেছি। মূল অভিযুক্তকে ধরেছি। তাঁর প্রশ্ন, আসামে চিটফান্ড কাণ্ডে বিজেপির অনেকের নাম ছিল। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি? হয়নি। কেন হয়নি? তৃণমূলের দিকে আঙুল তোলার আগে ওরা নিজেদের দিকে দেখুক। অভিযুক্তদের মধ্যে যারাই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে, তারাই বেঁচে যাচ্ছে। তা কেন হবে?