সমতল থেকে পাহাড়, সব জায়গাতেই মানুষের জন্যে কাজ করতে ব্যর্থ বিজেপি শিবির। যদিও বিপুল উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন কিন্তু পাহাড়বাসীর জন্যে কাজ করতে ভুলেই গেছেন দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া।
পাহাড়বাসীর জন্যে কাজ করা তো দূরের কথা, প্রায় প্রায় আড়াই বছর পাহাড়ে পা রাখেননি বিজেপির এই মন্ত্রী। খুব স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভে ফুঁসছে পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে আমজনতা। পাহাড়ের কোন অশান্তিতেই তিনি শান্তি ফেরাতে উদ্যোগ নেননি। পাহাড়ের বিভিন্ন শহরে দফায় দফায় পোস্টার পড়েছে। বিরোধী থেকে সাধারণ মানুষ দাবি তুলেছেন সাংসদের পদ ছাড়তে। কিন্তু পাহাড়কে ভুলে যাওয়া নেতা সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া আমলই দেননি। পাহাড়ে শান্তি ফিরেছে। তার পরেও শৈলশহরে পা রাখেননি। দেশ–বিদেশের পর্যটকরা এসেছেন। কিন্তু সাংসদের দেখা নেই। কয়েকবার শিলিগুড়ি বা সুকনা এলেও, সেখান থেকেই ফিরে গেছেন।
দার্জিলিঙের ম্যালে একটি বাড়িও ভাড়া নিয়েছিলেন। এক সময় গুরুংপন্থীরা বিজেপি সাংসদকে প্রশ্রয় দিলেও, এখন তাঁরাও আর বরদাস্ত করতে পারছেন না। সমতলের মানুষও অসন্তুষ্ট। শিলিগুড়ির নকশালবাড়ির হাতিঘিষা গ্রাম দত্তক নিয়েছিলেন। কিন্তু প্রায় ৫ বছরে সেই গ্রামে কোনও কাজ হয়নি। শিলান্যাস ছাড়া কোনও উন্নয়নের চিহ্ন নেই। একই অভিযোগ সমতলের অন্যান্য এলাকা থেকেও। আলুওয়ালিয়ার একটাই বক্তব্য, তিনি কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও, রাজ্যই নাকি উন্নয়নের কাজে লাগাচ্ছে না। এই কথা যে ধোপে টিঁকছে না তা বলাই বাহুল্য।
গেরুয়া শিবিরের অন্দরমহলেও তাঁর এই অনুপস্থিতির কোন ব্যাখ্যা নেই। বিজেপি–র পার্বত্য শাখার সভাপতি মনোজ দেওয়ানও জানান, ‘২০১৬ সালের মে মাসেই শেষবার এসেছিলেন। পরিস্থিতি খারাপ হতে আর আসেননি।’ কিন্তু নির্বাচিত সাংসদের তো দায়িত্ব আছে। উন্নয়নের কাজও কি বন্ধ? মনোজ দেওয়ান থেকে বিজেপি–র অনেক নেতাই এমন প্রশ্নে রুষ্ট হন। ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর বিজেপি–র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল পাহাড়ে গেলে, চরম বিক্ষোভের মধ্যে পড়েন। দেখানো হয় কালো পতাকা। ২০১৮ সালের আগষ্টে শিলিগুড়ি আসতেই ফুঁসে ওঠে গোটা দার্জিলিং–কালিম্পং। গো–ব্যাক স্লোগান ওঠে। এর পর আর পাহাড়মুখো হননি তিনি।