লোকসভায় পাশ হওয়ার পর থেকেই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে অসন্তোষ ক্রমশ বাড়ছে। সেইসঙ্গে আবার যোগ হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানির বেসরকারীকরণ। যার ফলে আসামে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছে মানুষ। আর সেই ক্ষোভ থেকে বাঁচতে এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণের রাস্তা নিয়েছে বিজেপি। যে কাজে এগিয়ে এসেছেন সারদা কাণ্ডে অভিযুক্ত আসামের অর্থমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্বশর্মা, যিনি সিবিআই তদন্ত শুরু হতেই কংগ্রেস ছেড়ে তিনি ঢুকে পড়েছিলেন বিজেপিতে। টুইটারে তিনি দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে মমতাদিদির তোলা অভিযোগগুলি অসত্য ও ভিত্তিহীন। এবং এই সবই বিজেপিতে যোগ দেওয়ার অনেক আগের ঘটনা।
প্রসঙ্গত, কংগ্রেসের মন্ত্রী থাকাকালীন হেমন্তকে সিবিআই সারদা কাণ্ড তদন্তে জেরা করেছে। তাঁর বিরুদ্ধেও সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তাঁকে ইঙ্গিত করেই সিবিআইকে খোঁচা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তড়িঘড়ি হেমন্তের হয়ে সাফাই গাইতে নেমে পড়েছেন আসামের বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাসও। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘সাহস থাকলে কংগ্রেসে থাকতেই হেমন্তের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে পারতেন গগৈ।’
সে রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা আবার বলছেন, সিবিআইকে রাজনৈতিক ভাবেই ব্যবহার করছে মোদী সরকার। চলছে দ্বিচারিতাও। পার পেয়ে যাচ্ছেন হেমন্তের মতো বিজেপি নেতারা। গতকাল সারদা চিটফান্ড কাণ্ড ও লুই বার্জার প্রতারণা মামলায় হেমন্ত বিশ্বশর্মাকে গ্রেফতারের দাবিতে গুয়াহাটিতে সিবিআই দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান যুব কংগ্রেস কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, আসামে ব্যবসা চালাতে সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে মাসে ২০ লক্ষ টাকা করে নিতেন হেমন্ত। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত জোরদার হতেই কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি।
আসাম কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রদ্যোত বরদলৈ বলেন, ‘বিজেপি আগে গুয়াহাটির জল সরবরাহ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে হেমন্তর বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল। গোয়ায় এই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হলেও অসমে কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। নিজেকে বাঁচাতে বার বার দল বদল করাই হিমন্তের স্বভাব।’ অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানিকে বিদেশি সংস্থার কাছে বন্ধক দেওয়ার অভিযোগ নিয়েও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এর প্রতিবাদে গণমস্তকমুণ্ডন কর্মসূচি পালন করেছেন তেল কোম্পানির কর্মী এবং স্থানীয় যুব-ছাত্র সংগঠনগুলির নেতা-কর্মীরা।