মঙ্গলবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে কলকাতার পুলিশ কমিশনার সংক্রান্ত মামলার রায় ঘোষণা হতেই সংসদে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিল বিরােধী জোট। ‘সিবিআই তোতা হ্যায়, ইয়ে সাবিত হো গেয়া’ আর ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগানে কেঁপে উঠল লােকসভা। ওয়েলে নেমে সোচ্চার হলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে গলা মেলালেন শিশির অধিকারী, দিব্যেন্দু অধিকারী, সৌগত রায়, শতাব্দী রায়, অপরূপা পোদ্দার ও ইদ্রিস আলী। তৃণমূল সাংসদের সঙ্গে সরব কংগ্রেস, টিডিপি, সপা, এনসিপি, এসএমএস সাংসদরাও।
বিরোধীদের সম্মিলিত বিক্ষোভের জেরে দফায় দফায় অধিবেশন স্থগিত হওয়ার পর দিনের মতো মুলতুবি রয়েছে সংসদের দুই কক্ষ। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের নৈতিক জয় হয়েছে। নগরপালকে নিরপেক্ষ জায়গায় সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে বলেছেন বিচারপতিরা। আদালতই শিলংকে বেছে দিয়েছে। রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে কোনও দমনমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া আদালতে কেন্দ্র সশস্ত্র বিদ্রোহের অভিযোগ তুলে রাজ্যের সাংবিধানিক সংকটের অভিযোগ তুলেছিল। কিন্তু আদালত তাতে কর্ণপাত করেনি। বরং রাজ্যের মুখ্য সচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি ও নগরপালের জবাব চাওয়া হয়েছে। তারা ১৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যে জবাব দিলে তা খতিয়ে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট। তারপর প্রয়োজন হলে সশরীরে উপস্থিত থাকার কথা উঠবে। ফলে, কেন্দ্রীয় সরকারের কোন ইচ্ছাই পূরণ হয়নি আদালতে।
আম আদমি পার্টির নেতা সঞ্জয় সিং জানিয়েছেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রমাণ হল, সিবিআই এর পদক্ষেপ ঠিক ছিল না। কোনও পরােয়ানা ছাড়াই রাতের অন্ধকারে নগরপালের বাড়িতে চড়াও হওয়ার ঘটনা স্পষ্টতই বেআইনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই আবারও সফল। আবার সপা সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদবের কথায়, ‘সিবিআই কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গুলি হেলনে চলতে গিয়ে বেআইনি কাজ করেছে। নগরপাল কাছে তদন্তে সাহায্য চাওয়া আর জোর করে তাঁর বাড়িতে ঢুকে গ্রেফতার করা এক জিনিস নয়। মমতার মতো নেত্রীই মোদীর স্বৈরতন্ত্রের যোগ্য জবাব দিতে পারেন।’
এনসিপি নেত্রী সুপ্রিয়া সুলের কথায়, ‘মমতাদির পাশে গোটা দেশ আছে। তিনি আবার জয়ী হয়েছেন।’ টিডিপি-র তরফে বলা হয়েছে, ‘যে সরকারের মেয়াদ আর মাত্র দু-এক মাস তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে সিবিআইকে অন্যায় কাজে ব্যবহার করতে চাইলেও সিবিআই আধিকারিকদের উচিত অন্যায় থেকে দূরে থাকা।’ অর্থাৎ দেশের প্রতিটি প্রান্তের বিরোধীরাই একবাক্যে স্বীকার করে নিচ্ছেন কেন্দ্রের সঙ্গে হওয়া এই সংঘাতে জয়ী মমতাই।