প্রাচীন কলকাতার গন্ধ এখনও যে ক’টি জায়গাতে পাওয়া যায় তাদের মধ্যে সাবর্ণ রায়চৌধুরীদের বাড়ি অন্যতম৷ এই বাড়ির দুর্গাপুজো আজও কলকাতার বিখ্যাত পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম৷ বিভিন্ন রকম সাংস্কৃতিক আবহের মাধ্যমে আজও রায়চৌধুরীর বাড়ি তাদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছে৷ রায়চৌধুরীদের ‘বড়বাড়ি’তে প্রতিবছরই বসে ইতিহাসের আসর। আন্তর্জাতিক সেই বার্ষিক প্রদর্শনীটির ১৪তম পর্ব শুরু হল রবিবার।
সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদ আয়োজিত ওই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সস্ত্রীক জুনিয়র পি সি সরকার। উপস্থিত ছিলেন ফরাসি লেখিকা জোসেফাইন গুয়েজেনেক, জাপানের কলকাতাস্থিত ভাইস কাউন্সেল মোনামি কাটো, অরোরা ফিল্মসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অঞ্জন বসু সহ অন্যান্য বিশিষ্টরা। এবার সাবর্ণদের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে মূল বিষয় বাংলা সিনেমার ১০০ বছর। সেখানে চুনি গোস্বামী বা সিনিয়র পি সি সরকারের মতো ভিন জগতের তারকারা কীভাবে বাংলা সিনেমায় জায়গা করেছেন, সেসব তথ্য ও নথিকেই সামনে এনেছে সাবর্ণরা।
সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার পরিষদের সম্পাদক দেবর্ষি রায় চৌধুরীর কথায়, ১৯৩১ সালে প্রথম সবাক বাংলা সিনেমা জামাইষষ্ঠী ইতিহাস তৈরি করে। তার পরিচালক ছিলেন অমর চৌধুরী। তাঁকে কেন্দ্র করে এবার বিশেষভাবে সাজিয়েছি আমাদের উৎসব। প্রণব রায় বা সত্য চৌধুরীর মতো শিল্পীরা আমাদের পরিবারের অঙ্গ। সঙ্গীতজগতে প্রণব রায় যেমন পরিচিত নাম, পরিচালক হিসেবেও তিনি স্বনামধন্য। ১৯৪৯ সালে প্রণব রায় পরিচালিত ‘রাঙামাটি’ সিনেমাটি যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল, যেখানে নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন সত্য চৌধুরী। সেইসব স্মৃতিকে আমরা ফের জীবন্ত করতে চেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, “বাংলা সিনেমার ১০০ বছরে বিভিন্ন সিনেমার পোস্টার আমরা হাজির করেছি এবার। বিভিন্ন শিল্পীর ব্যক্তিগত হরেক জিনিসের সঙ্গেই আছে পুরনো সিনেমার স্পুল, ক্যান। থাকছে অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, কবি, ডাক্তার ডাম্ব এবং মেবার সিংহাসন নামে চারটি সিনেমার আসল চিত্রনাট্য। ১৯০৬ সাল থেকে ব্যবহৃত বিভিন্ন ক্যামেরাকে আমরা অরোরা ফিল্মসের সৌজন্যে হাজির করেছি এখানে। আছে জলসাঘর সিনেমায় ব্যবহৃত ক্যামেরাও। এবার উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ সিনেমার ১২০টি বকুলেট, যা একসময় সিনেমা হলে বিনাপয়সায় দেওয়া হতো, বা বিক্রি হতো”৷ আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই উৎসব চলবে। আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীটিতে এবারের থিম কান্ট্রি জাপান৷