মঙ্গলবারই পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে হওয়া বিজেপির জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানহানির চেষ্টায় তাঁর ছবি আঁকা নিয়ে একাধিক মথ্যে অভিযোগ করেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বিজেপির বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শানালেন মমতা। বুধবার বীরভূমের রামপুরহাটে তৃণমূলের সভায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম করে তিনি বলেন, ‘মোদীবাবু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেন্টিং করে টাকা নিয়েছেন, প্রমাণ করুন। এক পয়সা নিয়ে থাকলে তা-ও প্রমাণ করুন।’
এখানেই না থেমে তিনি আরও বলেন যে, ‘কিছু অর্ধশিক্ষিত আর গর্ধশিক্ষিত এসে বড় বড় ভাষণ দিচ্ছে। আমি ছবি আঁকলেও বলছে চুরি। লিখলেও বলছে চুরি।’ একইসঙ্গে মোদী-শাহর উদ্দেশ্যে তাঁর চ্যালেঞ্জ, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি। যদি দেখাতে পারে ছবি আঁকার এক পয়সা আমার অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে, তাহলে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’
তৃণমূল কংগ্রেস বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নিজের নামে চালাচ্ছে, কাঁথির সভা থেকে এমন অভিযোগও তুলেছিলেন বিজেপি সভাপতি। রামপুরহাটের সভায় এই নিয়েও জবাব দেন মুখ্যমন্ত্রী। কন্যাশ্রী প্রকল্প, নির্মল বাংলা প্রকল্প নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার অনেক আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, বাংলার কন্যাশ্রী প্রকল্প থেকে টুকেই ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্প শুরু করেছে কেন্দ্র।
বাংলায় সরস্বতী পুজো, দুর্গা পুজো করতে দেওয়া হয় না, অমিত শাহের তোলা এই মিথ্যে অভিযোগের বিরুদ্ধেও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি সিবিআই তদন্ত নিয়েও বিজেপিকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, কেন্দ্রের হাতে সিবিআই থাকলে রাজ্যের হাতেও সিআইডি, এসটিএফ-এর মতো তদন্তকারী সংস্থা আছে।
রামপুরহাটের মঞ্চ থেকে মমতার হুঁশিয়ারি, ‘ওরা সিবিআই, ইডি-র মতো অনেক এজেন্সি দেখাচ্ছে। তবে আমাদের সিবিআই দেখিয়ে লাভ নেই। মনে রাখবেন, আমাদের হাতেও সিআইডি আছে, এসটিএফ (স্পেশাল টাস্ক ফোর্স), আর্থিক দমন শাখা আছে। শিশু চুরি, গ্যাল কেলেঙ্কারিতে বিজেপি নেতাদের যুক্ত থাকার সমস্ত নথি আমাদের কাছে আছে। শিশু চুরির মামলায় কিন্তু এখনও বাইরে ঘুরছে অনেকে।’
প্রসঙ্গত শিশু চুরি এবং পাচারের মামলায় নাম রয়েছে বিজেপি নেত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বিজেপি-র তরফে বাংলার পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নামও রয়েছে ওই মামলায়।