মতুয়া ভোট পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। কিন্তু যতই প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে সভা করাক, কোনও দিনই মতুয়া সমাজের মন পাবে না ওরা। বিজেপির এই ঘৃণ্য রাজনীতি মতুয়ারা মেনে নেবেন না। রবিবার ঠাকুরনগরে এভাবেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
মতুয়াদের একাংশের আহ্বানে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরনগরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এ প্রসঙ্গে সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন মাঠে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি সঙ্ঘের একটি ধর্মীয় সভা হওয়ার কথা। অথচ সেই মাঠেই মতুয়াদের নাম করে শান্তনু ঠাকুর এবং তাঁর লোকজন প্রধানমন্ত্রীকে এনে আলাদা সভা করার প্রস্তুতি নিয়েছে। এভাবে জোর করে সভা করা যায় না।’ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রীর আসার খবরে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘ঠাকুরবাড়ির ভেতরে কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করা যাবে না। এই নিয়ম ভেঙে রবিবার শান্তনু ঠাকুর এবং মুকুল রায়ের নেতৃত্বে এলাকায় প্যারেড করেছে আরএসএস-এর লোকজন। তারা লাঠি খেলার প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। ধর্ম নিয়ে বিজেপির এই ঘৃণ্য রাজনীতি মতুয়া সমাজ কিছুতেই মেনে নেবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া বড়মা আর কাউকে চেনেন না। বড়মার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা-মেয়ের সম্পর্ক।’
তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘ঠাকুরবাড়ি এবং সংলগ্ন এলাকা জুড়ে সর্বত্রই তৃণমূলের উন্নয়নের ছোঁয়া। তাই সেখানে মোদীর আসা না আসার মধ্যে কোনও পার্থক্য ঘটবে না। মতুয়াদের মন পেতে, মতুয়া ভোট পেতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। আমরা তৃণমূল কর্মীরা বিজেপির সেই চেষ্টাকে পদে পদে আটকাব। এটা আমাদের দায়িত্ব। মুকুল রায়কে এ ব্যাপারে আমি চ্যালেঞ্জ করছি। ক্ষমতা থাকলে তিনি আমার এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন।’
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল দেখতে রবিবার ঠাকুরনগরে আসেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের (মঞ্জুলপন্থী) সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে গোপন বৈঠকও করেন মুকুল। পরে তিনি এলাকার একাধিক মাঠ ঘুরেও দেখেন। জানা গেছে, বিতর্ক এড়াতে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থল পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন মাঠের বদলে হাইস্কুলের মাঠে হবে ওই সভা।
গতকাল বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সভায় বড়মাকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে বিজেপি। কিন্তু বড়মা যদি যেতে না চান, যদি তিনি ঘরে দরজা বন্ধ করে বসে থাকেন, তা হলে বিজেপি কর্মীরা কি দরজা ভেঙে বড়মাকে মঞ্চে নিয়ে যাবেন? এমন ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা হলে সাধারণ মতুয়ারা তা মেনে নেবেন না। বিজেপির এই রাজনৈতিক অপচেষ্টা সর্বভারতীয় মতুয়া সমাজ কিছুতেই ক্ষমা করবে না।’