বাংলার ক্রীড়াক্ষেত্রে আরও বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। ভালো খেললে বা রাজ্যের কোনও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ান হলেই মিলবে সিভিক ভল্যান্টিয়ারের চাকরি। আজ সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে খেলাশ্রী পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি জেলা ও কলকাতার ৪ হাজার ক্লাবকে অনুদান দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মমতা।
এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘রাজ্য জুড়ে এখন জঙ্গলমহল উৎসব, নদী–পাহাড় উৎসবের মতো বিভিন্ন উৎসব চলে। এছাড়া পুলিসের পক্ষ থেকেও প্রায় ৩০০০০–৪০০০০ ক্লাবকে খেলানো হয়। এই সব খেলাগুলিতে যারা চ্যাম্পিয়ন হবে বা যে খেলোয়াড়রা ভাল খেলবেন তাঁদের সবাই সিভিক ভলেন্টিয়ারের চাকরি পাবেন’।
খেলোয়াড়রা জিতলে শুধু টুইটেই শুভেচ্ছা জানিয়ে অনেকে দায়িত্ব সারেন বলে কটাক্ষ করে মমতা জানান, খেলোয়াড়দের জন্য পেনশন চালু করার কথাও ভাবছে রাজ্য সরকার। শুধু খেলোয়াড়রাই নন, ক্রীড়াক্ষেত্রে যুক্ত অনেক দরিদ্র মানুষই এখন পেনশন পাচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বাংলার ক্রীড়াক্ষেত্রের জন্য কিছু না করার জন্য বাম আমলের কড়া সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘আগের সরকার ক্রীড়া ক্ষেত্রে মাত্র ৭৩ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ করেছিল। তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা সাত গুণ বাড়িয়ে এখন ৫১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। প্রতিটি ক্লাবকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে, ২২১টি কোচিং সেন্টারগুলিকে এক লক্ষ টাকা করে এবং ২৪০০০ ক্লাবকে পরিকাঠামো তৈরি করতে অনুদান বরাদ্দ করেছে রাজ্য’।
শুধু ক্রীড়া জগতের সমস্যাই নয়, এদিন ব্যক্তিগত ফোন, নেটে আড়িপাতা নিয়ে এবং অসমের এনআরসি নিয়ে ও কেন্দ্রের পদক্ষেপকেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মমতা। তাঁর মন্তব্য, ‘এখন গোপনীয়তার কোনও অধিকার নেই। আড়ি পেতে স্টিং অপারেশন চলছে।’ এনআরসি-র তীব্র বিরোধীতা করে মমতা এদিন ফের বলেন, ‘বাংলা কাউকে তাড়িয়ে দেয় না। এক নাগরিকত্ব দু’বার করে দিয়ে কাউকে বিদেশি করা যাবে না। কারও জন্মের তারিখ উল্লেখ না থাকলে তাঁকে এনআরসি তালিকাভুক্ত না করে নাগরিকত্বের রিপোর্টে ছয় বছরের জন্য বিদেশি ঘোষণা করা হচ্ছে। ছয় বছর পর তাঁকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।’ মানুষকে আশ্বাস দিয়ে মমতার মন্তব্য, ‘এগুলিও সবই নির্বাচনী তত্ত্ব। ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।’
নাম না করে সিবিআই-ইডি তল্লাশি নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থানকে তুলোধনা করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, নোটবন্দীর ফলে অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো ভুগতে হয়েছে ক্রীড়া জগতকেও। আগে অনেক কোম্পানি বিভিন্ন ক্লাবকে অর্থ সাহায্যের জন্য স্পনসরশিপে এগিয়ে আসত। কিন্তু সেগুলিই এখন কেন্দ্রীয় সংস্থার তল্লাশির নামে চোখ রাঙানির ভয়ে এধরনের সাহায্য করার ভাবনা থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে। অথচ ক্লাবগুলি স্পনসরশিপের টাকাতেই চলে’।