চলতি অর্থবর্ষে দেশের জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলি তাদের প্রাপ্ত অনুদানের যে হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে, তার মধ্যে প্রায় ৬৯০ কোটি টাকা আয়ের কোনও উৎস উল্লেখ করেনি তারা। অর্থাৎ অজ্ঞাত সুত্র থেকে ৬ টি জাতীয় দল আয় করেছে এই পরিমাণ টাকা। আবার এর মধ্যে গোপন সূত্র থেকে ৫৫৩.৩৮ কোটি টাকাই আয় করেছে বিজেপি একা। ২০১৭-১৮ বছরে দেশের সবকটি জাতীয় দল মিলে ‘অজ্ঞাত সূত্র’ থেকে যে টাকা আয় করেছে তার মধ্যে ৮০ শতাংশ টাকা একাই আয় করেছে বিজেপি।
বুধবার এই রিপোর্ট পেশ করেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস বা এডিআর। প্রকাশিত রিপোর্টে এডিআর জানিয়েছে, গত ১৪ বছরে জাতীয় দলগুলি যে পরিমাণ আর্থিক অনুদান পেয়েছে বলে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে, তার মধ্যে প্রায় ৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা এসেছে ‘গোপন’ বা অজ্ঞাত সূত্র থেকে। রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১৪ বছরে জাতীয় দলগুলি যে অনুদান পেয়েছে, তার মধ্যে ৮৭২১.১৪ কোটি টাকার অনুদানকারী সংস্থা বা ব্যক্তির নাম প্রকাশ করেনি তারা। এর মধ্যে, ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে মোট ৬৮৯.৪৪ কোটি টাকা এসেছে অজ্ঞাত সূত্রে।
এডিআর-এর তথ্য অনুযায়ী, প্রাপ্ত অনুদানের ৫০ শতাংশেরও বেশি টাকার ক্ষেত্রে অনুদানকারীর নাম জানায়নি জাতীয় দলগুলি। যদিও, ২০১৩ সালের আরটিআই আইন অনুযায়ী ২০ হাজার টাকার বেশি অনুদান পেলে অনুদানকারীর পরিচয় জানানো রাজনৈতিক দলগুলির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক।
শুধুমাত্র ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে যে ৬৮৯.৪৪ কোটি টাকা অনুদান ‘গোপন’ বা অজ্ঞাত সূত্র থেকে জাতীয় দলগুলি পেয়েছে, তার মধ্যে বিজেপির একার রয়েছে ৫৫৩.৩৮ কোটি টাকা। এই অনুদান এসেছে মূলত ইলেক্টোরাল বন্ড, ত্রাণ তহবিল, স্বেচ্ছাকৃত দান, বিভিন্ন মিটিং বা মোর্চা থেকে পাওয়া অনুদান ইত্যাদি থেকে।
২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে ৬ টি জাতীয় দল মোট ১২৯৩.০৫ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪৬৭.১৩ কোটি টাকার উৎস নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রকাশ করেছে তারা। অর্থাৎ, মোট অনুদানের মাত্র ৩৬ শতাংশ টাকার বিস্তারিত তথ্য দিয়েছে দলগুলি। এছাড়া,মেম্বার ফিজ, ব্যাঙ্ক ইন্টারেস্ট, দলের মুখপত্র বিক্রি করে আরও ১৩৬.৪৮ কোটি টাকা (১১ শতাংশ) আয়ের তথ্য তারা নির্বাচন কমিশনে দিয়েছে। বাকি ৫৩ শতাংশ টাকা আয়ের কোনও সূত্র প্রকাশ করেনি তারা।