আবারও অগ্নিকান্ড শহরে৷ শনিবার গভীর রাতে যখন এলাকা ঘুমে আচ্ছন্ন, সেই সময়েই ভয়াবহ আগুন লাগে গড়িয়াহাট মার্কেটে। খবর পেয়ে দমকলের ২০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু এবং একাধিক দমকল কর্তাও। শনিবার গভীর রাতের সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে আজ বেলা ১১টা বেজে যাওয়ার পর৷ প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা৷
দমকল সূত্রের খবর, গড়িয়াহাট মোড়ে শনিবার গভীর রাতে একটি পাঁচ তলা বহুতলে আগুন লাগে। বহুতলের নীচে কাপড়ের দোকানে প্রথমে আগুন লাগে। সেখান থেকেই তা ছড়িয়ে পড়ে। ওই বাড়িতে রয়েছে নামী পোশাকের বিপণি-সহ বেশ কিছু দোকান ও আবাসিক ফ্ল্যাট। তাতে থাকেন ৪৫জন আবাসিক। প্রাথমিক ভাবে, আগুনের জেরে কয়েক জন আবাসিক আটকে পড়েন বলেও দমকল সূত্রে জানানো হয়েছিল। তবে, আটকে পড়া প্রত্যেককে উদ্ধার করা সম্ভব হয় বলে রবিবার সকালে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি, বেশ কয়েকটি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। দমকল কর্মীরা জানাচ্ছেন, আগুন লাগার পরে বাকি সব বাসিন্দা নেমে এলেও পা ভাঙা থাকায় এক মহিলা আটকে পড়েন। পরে দমকল ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করেছেন৷
যদিও এখনও আগুন লাগার সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হয়নি। প্রাথমিক ভাবে দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই এই ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের পরই আগুন লাগার কারণ স্পষ্ট জানা যাবে বলে দমকলের তরফে জানানো হয়েছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ওই এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। ফলে ভিতরে প্রবেশ করে উৎসস্থলে পৌঁছতে অসুবিধায় পড়েন দমকল কর্মীরা। বেশ কয়েকটি দোকানের শাটার কেটে ভিতরে ঢোকেন দমকল কর্মীরা। তাঁরা জানান, বাগরির মতো এ ক্ষেত্রেও পকেট ফায়ারের কারণে পরিস্থিতি জটিল আকার নিয়েছিল। দাহ্য পদার্থ থাকায় দ্রুত আগুন পাশের কয়েকটি দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ফলে এলাকাবাসীরা। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক ছিল না বলে দমকলের তরফে অভিযোগ করা হয়। দমকলের অনুমান বাইরে থেকে আগুন লেগেছে। পরে তা ভিতরে ছড়িয়ে পরে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় দমকলকে। কাপড়ের গুদামে আগুন লাগার কারণ তা সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে বার বার প্রতিকূলতার মধ্যে পড়তে হয় দমকলকে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে আনা হয় হাইড্রোলিক ল্যাডারও৷
অন্যদিকে আগুনের জেরে গড়িয়াহাটের রাস্তার একাংশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগ্নিকান্ডের জেরে যান চলাচলের উপর নিয়ন্ত্রণ জারি করা হয়েছে। যে গাড়িগুলো রাসবিহারী দিক থেকে বালিগঞ্জের দিকে যাচ্ছে, সেগুলোকে যতীন বাকচী রোড-পূর্ণদাস রোড হয়ে গোলপার্কে নিয়ে আসা হচ্ছে। সেখান থেকে গড়িয়াহাট ফ্লাইওভার হয়ে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে বালিগঞ্জের দিকে পাঠানো হচ্ছে। রবিবার যানবাহন কম থাকার ফলে যানজট হয়নি বলেই পুলিশ সূত্রে খবর৷