তর্জন-গর্জনই সার। যাঁদের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল, দু’দিন ধরে তাঁরাই বাস, লরি, ট্যাক্সি, অটো রাস্তায় নামিয়ে জনজীবন স্বাভাবিক রাখলেন। সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের প্রত্যাঘাতের মন্তব্য জলে গেল। দূরদূরান্তে দেখা যায়নি লাল ঝাণ্ডাধারীদের। কর্মীরা রাস্তায় নামেননি। বরং কলকাতা জেলা সিপিএম দফতরে চলল চুটিয়ে ফিস্ট। মেনু খিচুড়ি আর হাঁসের ডিম। শেষপাতে চাটনি।
সারা দেশেই বামেরা এখন ক্ষয়িষ্ণু শক্তি। সংগঠন কঙ্কালসার। কর্মীসংখ্যা তলানিতে। এমন পরিস্থিতিতে দুদিনের ধর্মঘট ডেকেছিল তারা। যা দেখে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া, ‘একদিন হয় না, আবার দু’দিন’! কার্যত তাই হল। কোনও নেতাকেই রাস্তায় নামতে দেখা গেল না। যখন দিশা দেখানোর প্রয়োজন ছিল, সেইসময় সুজন চক্রবর্তীর মতো নেতারা সাতসকালেই দিব্যি গ্রেফতারি বরণ করে নিলেন। আর বাকি নেতা-কর্মীরা কামিনি আতপ চালের খিচুড়ি, হাঁসের ডিমের ডালনা আর চাটনি দিয়ে ভুঁড়িভোজ সেরে জেলা অফিসে আঙুল চাটতে চাটতে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুললেন।
ফলে সিটু, আইএনটিইউসি-সহ অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনের ডাকা ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন কার্যত বুমেরাং হয়ে ফিরল ধর্মঘটীদের কাছে। সাধারণ মানুষকে বোঝাতে না পেরে বামেরা হিংসার দ্বারস্থ হলেন। রেললাইনে বোমা থেকে ভাঙচুর চলল। এমনকি কচিকাঁচাদের স্কুলবাসেও নিজেদের দাপট দেখাল তারা। কিন্তু রাজ্য পুলিশের হস্তক্ষেপে সেখানেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি তারা।
সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জনতাকে ধন্যবাদ জানালেন। সেটা পাশে না থাকার জন্য, নাকি নিজেদের ক্ষয়িষ্ণু ক্ষমতা ভালো মতো টের পাইয়ে দেওয়ার জন্য, সেটা বোঝা গেল না।